এমপিও ভুক্ত হওয়ায় নতুন শিক্ষকের আগমন অবৈধ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিয়োগ পর্ব ১
স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
উদয়পুর ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতির যোগসাজশে অবৈধ প্রধান শিক্ষক নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ বাণিজ্য এবং পাটদান না করার পরেও জোরপূর্বকভাবে ক্ষমতায় বসে অধিপত্য বিস্তারসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অবৈধ এই প্রধান শিক্ষক আক্তারুজামান রোকনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষক/কর্মচারীকে পূর্বের তারিখ দেখিয়ে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, রাঘবপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল তার শেষ সম্বল ৫০ শতক জমির উপর রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৮ সালে স্থাপিত করেন। ননএমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য সরকার চিন্তা করে প্রণোদনা সহায়তা দেয়। এক পর্যায়ে গত ৬ই জুলাই ২০২২ ইংরেজি তারিখে রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়৷
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কোন নিয়ম না থাকলেও অবৈধ ভাবে প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান গোপনে পূর্বের তারিখ দেখিয়ে নিয়োগ দেয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়।
সদ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর ২০০৪ সাল পর্যন্ত পূর্বের জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় সহকারী শিক্ষক হিসাবে আক্তারুজ্জামান রোকন ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিয়োগ লাভের পর যোগদান করে। এমপিও নীতিমালা তোয়াক্কা না করে ২০০৮ সাল হতে প্রধান শিক্ষক হিসেবে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছে। বর্তমান অবৈধ প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান (২০০০-২০০৩-২০০০১) পূর্বের সালের নিয়োগ দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে শিক্ষক ও কর্মচারীকে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে আসছেন৷ তাদের যোগদান অনুযায়ী কারো বয়স ৫ বছর, ১২ বছর আবার কারো বয়স ১৭ বছর বয়স দেখানো হয়েছে এবং বাস্তবে তা পরিলক্ষিত করা গেছে। অবৈধ প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান এর ব্যানবেইস এ দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার হাত দিয়ে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের এমপিও ভুক্ত করার জন্যে আক্তারুজ্জামান প্রধান শিক্ষক হিসেবে ক্রমান্বয়ে যোগদান দেখান ২০০৩,২০১৩,২০০০ সাল। এমনকি নাটরের গুরুদাশপুরের নির্মল চন্দ্র কে অবৈধ নিয়োগ দিয়ে যোগদান দেখানো হয়েছে ২০০০ সালের আগষ্ট মাসের ২২ তারিখ অথচ তার বিএসসির রেজাল্ট হয় ২০০১ সালের আগষ্ট মাসের ১৫ তারিখে প্রমাণ মিলে তার সার্টিফিকেটে।
বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। জাল কাগজপত্র তৈরি করে অবৈধ প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) তথ্য দিলে ব্যানবেইস তার বার্ষিক জরিপে ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৭ জন শিক্ষক/কর্মচারীকে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দানের তথ্যপান। আখতারুজ্জামান এদের মধ্যে ১৩ জনের নামের চুড়াম্ত তালিকা ব্যানবেইসে পাঠিয়েছেন ২০২৩ সালে। আরো কয়েক জনকে অপেক্ষা মান তালিকায় রেখেছেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সভাপতি ছিলেন আঃ রাজ্জাক তিনি মারা য়ান ১৯ /৭/২০১৯ইং সালে।আর প্রতিষ্ঠাতালগ্ন থকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক ছিলেন মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল। বর্তমান অবৈধ প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামন রোকনের যোগ সাজসে, অর্থের বিনিময়ে,পেষি শক্তির এবং রাজনৈক প্রভাব দেখিয়ে শিক্ষকতা করে আসতেছেন৷ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বৈধ শিক্ষক / কর্মচারীদের কেনো এমপিও ভুক্ত করা হবেনা মর্মে হাইকোর্টে একটি রিট করা হয়েছে,যাহার নং ২২৩৩/২০২৩ ও জয়পুরহাট বিজ্ঞ জজ আদালতে একটি চলমান মামলা আছে৷ যাহার নং ৩১৫/২০২১
অবৈধ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারটি দখল করে চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বানিজ্য কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্বের প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত,আপন চাচা সোলাইমানকে মনোনয়ন দেন। আর এ,চাচাকে হাতে নিয়েই তিনি প্রধান শিক্ষকের লোভনীয় চেয়ারটি দখল করে আছেন৷
রাঘবপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তারুজামান রোকন এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন হাইকোর্টে মামলা চলমান আছে, রায়ে যদি পৃর্বের হেডমাস্টার থাকে আমাদের না হলে আমরা চলে। যাবো৷
প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.আঃ রাজ্জাক বলেন, ব্যানবেইস এ কে কি তথ্য দিচ্ছে সেটা আমাদের জানার বাইরে। বাদি পক্ষ সকল তথ্য দিতে পারেনি তবে আমরা তদন্ত করেছি তদন্ত প্রক্রিয়াধিন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।