ওসির নির্মম নির্যাতনের শিকার যুবলীগ নেতা পুলক ও ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকি
মোঃ আব্দুস সবুর কাদেরী (দুলাল)স্টাফ রিপোর্টার
ঠাকুরগাঁও জেলার ওসির নির্মম নির্যাতনের কথা এভাবে স্বীকার করেন যুবলীগ নেতা।
আমার জ্ঞান ফিরলে মধ্যরাতে সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট দেয়। এসময় চিকিৎসক আমার কাছে মারধরের ঘটনা জানতে চাইলেও ওসি এতে বাঁধা দেন। আমার হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় এক্সরে করার নির্দেশনা থাকলেও ওসি আমাকে ওই অবস্থাতেই থানা কাষ্টরিতে রেখে দেয়। পরদিন সকাল ৯টার মধ্যেই আবার আমাদের কোর্টে চালান করে।
আসাদুজ্জামান পুলক বলেন, একজন মানুষ এমন নির্দয় হতে পারে তা আমি কখনো দেখিনি। আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ জেনেও আমাকে ট্রিটমেন্ট নিতে দেননি এই ওসি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই অত্যাচারী ওসি’র দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাই।
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য দেবাশীষ দত্ত সমীর বলেন, সদর থানার ওসি অন্যায়ভাবে আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক ও ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকিকে বেধড়ক পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। মারধর করে সাংগঠনিক সম্পাদক পুলক ও ক্রীড়া সম্পাদক রকিকে হাসপাতালে নিলে আমি হাসপাতালে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করার চেষ্টা করেও ওসি’র অসৌজন্যমুলক আচরণে তাদের সাথে দেখা করতে পারিনি পুলককে এমনভাবে মারধর করা হয়েছে যে ওর বাঁ হাত পর্যন্ত ভেঙ্গে গেছে এবং সারা শরীরে রক্তাক্ত ফোলা জখম করেছে। ওসি’র এ অন্যায় মেনে নেওয়া যায় না-আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং ওসি’র দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাই।
জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল বলেন, কোন রকম অভিযোগ ছাড়াই আমাদের ২জন দলীয় নেতাকে আটক করে থানায় আটক রেখে অমানবিক নির্যাতন করেছেন সদর থানার ওসি। আমরা সাংগঠনিকভাবে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় আমরা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং অভিযোগের কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ মহা-পরিদর্শক, বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা আ’লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর জমা দিয়েছি। আশাকরি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জেলা পুলিশের কর্ণধার অভিযুক্ত ওসির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা নিবেন।
মারধরের বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মো: কামাল হোসেন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ঘটনার দিন মেলা কমিটি মৌখিক অভিযোগ করেন মেলায় কতিপয় ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে মাতলামি করছে-এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নেয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে ১৫১ ধারায় মামলা দাখিল করে তাদের কোর্টে চালান দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, তাদের ছাড়তে জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দরা তদবির করলেও তাদের না ছাড়ায় এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে এ বিষয়ে বৈশাখী মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান সাবু’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেদিনের বিষয়ে মেলা কমিটির পক্ষ থেকে কেউ থানায় কোনো অভিযোগ বা লিখিত অভিযোগ করেননি।