দক্ষিণ উপকূলীয় থেকে অনেক বন্যপ্রাণি বিলুপ্তির আশঙ্কা
এফ এম এ রাজ্জাক পাইকগাছা (খুলনা)
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উপমূলীয় এলাকা থেকে অনেক প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হতে চলছে। অনেক গুলো ইতি মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যথেচ্ছা কীটনাশকের ব্যবহার, অবাধে বনভূমি কেটে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট এবং ইচ্ছা মতো পশুপাখি শিকার করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গাছপালার মতোই বন্য পশুপাখি স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। বন্যপ্রাণি বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য। অথচ আমাদের দেশে পশুপাখি সংরক্ষণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ইচ্ছা মতো চলছে পশুপাখি শিকার। এতে করে খুলনা জেলা সহ সুন্দরবনের অনেক বন্যপ্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। অপরদিকে, ফ্রি স্টাইলে জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলেও পাখি সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পাখি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি ফসলের পোকামাকড় খেয়ে ফসলকে বাঁচায়। লোকসংখ্যা বৃদ্ধি ও সুন্দরবনের সম্পদ আহরণের পরিকল্পনা না থাকায় এসব জায়গায় পশুপাখি বিচরণ ক্ষেত্র তৈরি করতে পারছে না। ফলে এ অঞ্চলে পশুপাখি সমূহ বসবাসের স্বাভাবিক পরিবেশ হারাচ্ছে। ইতো মধ্যে অনেক বন্যপাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে এ অঞ্চলে বেঁকশিয়াল, শিয়াল,বনবিড়াল, বাঘরোল, বাঘধারা, ভোদড়, মোরেল, ধেড়ে, বেজি, হনুমান প্রভৃতি বন্যপ্রাণী এবং হরেল, ঘুঘু, চদর ঘুঘু, সাহেব বুলবুল, শরম, ভীমরাজ, বিলবাচ্চু, বাবুই, মদনটাক প্রভৃতি পাখি দেখা যায় না। কিছু দিন আগেও এ অঞ্চলে নির্জন রাতে সজারু চলাচলের ঝুনঝু আওয়াজ শোনা যেত। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশে বিলুপ্ত হয়ে গেছে সজারু। বিলুপ্ত হয়ে গেছে বিভিন্ন প্রকার সাপ। প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতার কারণে সুন্দরবনের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। প্রতিকূল পরিবেশের কারণে গাছপালা মরে যাচ্ছে, বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীবজন্তু। ইতি মধ্যে সুন্দরবন এলাকা থেকে অনেক প্রজাতির জীবজন্তু বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার অনেকগুলো বিলুপ্তির পথে। গন্ডার, বুনো মহিষ, নীলগাই, নেকড়ে, চিত্রা হরিণ, বারসিঙ্গা হরিণ, মিষ্টি পানির কুমির প্রভৃতি জীবজন্তু দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে পাওয়া যায় না। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির বানর, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মায়া হরিণ, কুকুরে হরিণ, সাদা কালো হরিণ আগের মতো আর দেখা যায় না। সুন্দরবন থেকে কমে গেছে মদনটাক, বাঁশকুড়াল, বাঁশিচোরার, শঙ্কখোল প্রভৃতি পাখি। কয়েক বছর আগেও এ অঞ্চলের প্রকৃতি ছিল জীববৈচিত্র্যে ভরপুর । কিন্তু ইচ্ছামতো বন্যপ্রাণী শিকার, যথেচ্ছা কীটনাশকের ব্যবহার এবং বিশেষ করে বনভূমি সাবাড় হওয়া, জলবায়ুর পরিবর্তন, বনভূমির ব্যবহার যথেচ্ছভাবে করার ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। পশুপাখি হচ্ছে নিরাশ্রয়। কাজেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের এসব বণ্যপ্রাণি রক্ষা ও সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী । বিশিষ্ট আইনজীবী এ্যাড: জি এ সবুর বলেন, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায় বিভিন্ন এনজিও এবং সামাজিক সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। নইলে এ পরিবেশ নষ্ট হয়ে ক্ষমতা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটবে।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।