পাগলাপীরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার ভুল পরামর্শে ৭০ লাখ টাকামূল্যের লিচু নষ্ট হওয়ায় অভিযোগ
এএস নুসরাত জাহান খুশি, রংপুর
রংপুর জেলার সদর উপজেলার হরিদেবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের হরকলি এলাকায় লিজ নেয়া চারটি লিচু বাগানের ৭০ লাখ টাকা মূল্যের লিচু নষ্ট হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে পান বাজার এলাকায় কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের ভুল পরামর্শে এমনটি হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। মোঃ নুরু মিয়া ও মোঃ সাইয়েদুল নামের দুই ব্যক্তি লিখিত অভিযোগটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব, রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর জেলা প্রশাসক, উপ-পরিচালক,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার,ও অফিসার ইনচার্জ কোতয়ালী থানা,সদর রংপুর বরাবর পাঠিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মোঃ নুরু মিয়া ও মোঃ সাইয়েদুল নামের দুই ব্যক্তি ব্যাংক ঋণ, এনজি ঋণ ও ধার দেনা করে চারটি লিচু বাগান ১৮ লাখ টাকা দিয়ে বাৎসরিক লিজ গ্রহণ করেন। লাভের আশায় পরিচর্যাসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন। তারা জানিয়েছেন, লিচু বাগানগুলোতে ভালো ফলনের আশায় দেড় মাস আগে থেকে ৯০০টি লিচু গাছে নিয়মিত সেচ ও পরিচর্যা করা হচ্ছিল। প্রতিটি গাছে ফুল এসেছিল। রংপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে পান বাজার এলাকায় কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বেশী ফলনের স্বপ্ন ও প্রতিশ্রæতি দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ প্রেসক্রিপশন দিয়ে লিচু গাছে প্রয়োগের পরামর্শ প্রদান করেছিল। আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের পরামর্শ মোতাবেক সন্দেহাতীত ভাবে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওইসব ঔষধ লিচু গাছে প্রয়োগ করি। কিন্তু লিচু ফল হিসেবে পরিপূর্ণ হওয়ার আগে আধপাকা ও লাল হয়ে উঠে, পোকা ধরে এবং ডাল থেকে খসে পড়তে থাকে। আমাদের ৭০ লাখ টাকা মূল্যের লিচু চোখের সামনে নষ্ট হয়ে যায়। কোন লিচু বিক্রি করতে পারিনি। স্থানীয় জনগণ এবার লিচু খেতে পারেনি। আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের কাছে কেন এমন হয়েছে ? জানতে চাইলে তিনি দায় এড়িয়ে যান। যোগাযোগ বন্ধ করেন। বর্তমানে লিচুর এইভরা মৌসুমে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। আমরা মনে করি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম ইচ্ছাকৃত ভাবে আমাদের ক্ষতি করার লক্ষ্যে ভুল পরামর্শ প্রদান করেছিলেন। যার কারণে আমরা ব্যাংক, এনজি ও ধার দেনা করে লিজ নেয়া ১৮ লাখ টাকা ও পরিচর্যার খরচসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছি। সদর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মহিউদ্দিন মখদুমী জানান, কৃষির ক্ষতি, কৃষকের ক্ষতি মানে সবার ক্ষতি। কেন ওই কৃষকের সর্বনাশ হলো এটি তদন্ত করে বের করার দাবি জানাই। অভিযোগের বিষয়ে কথা হলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের অভিজ্ঞ কৃষি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তারপর স্পষ্ট হবে ঘটনাটি কেন ঘটেছিল কিংবা দোষ কার।