পানিবন্দি সহস্রাধিক পরিবারে সংকট বাড়ছে, স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ চলছে
এফ,এম,এ রাজ্জাক, পাইকগাছা (খুলনা)
ঘূর্ণিঝড় রেমাল তান্ডবে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পাউবোর বেড়িবাঁধের অন্তত ৩৫টি স্থানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসময় জলোচ্ছ্বাসে বিভিন্ন পোল্ডার অভ্যন্তরে লবণপানি ঢুকে বিস্তির্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে হাজার হাজার বিঘার চিংড়ি ঘের, ফসলের ক্ষেত ভেসে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার পরিবার। পোল পড়ে ও গাছ পড়ে বিভিন্ন এলাকায় তার ছিড়ে পড়ায় গোটা উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। গত ৪ দিনেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা পরিষদ থেক সরবরাহকৃত জিও ব্যাগ ও বস্তায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এলাকায় লোকজন স্বেচ্ছা শ্রমে বাধ নির্মাণ কাজ চলছে। কোন কোন এলাকায় বাঁধ কেটে পানি নামানো হচ্ছে। তবে জোয়ারে ফের পানি প্রবেশ করায় বাঁধ মেরামতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে পানিবন্দি ও আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা পরিবারের মধ্যে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলা পরিষদ ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া শুকনো খাবার অপ্রতুল হওয়ায় কোন কোন এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। পানিতে প্লাবিত থাকায় সুপেয় পানির সংকট ক্রমশ বলবৎ হচ্ছে। পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ারও আশংকা করা হচ্ছে। রোববার রাতে জোয়ারের উপর ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার ১০/১২ নং পেল্ডারের গড়ইখালীর কুমখালীর ক্ষুদখালীসহ অন্তত ৩৫টি পয়েন্টে ভাঙ্গনসহ ২৩নং পোল্ডারের লস্করের বাইনতলা, কড়–লিয়াসহ ৩টি স্থানে, লতা, দেলুটি, হরিঢালী, রাড়–লী, কপিলমুনিসহ সোলাদানার একাধিক পয়েন্টে বাঁধ ভেঙ্গে ও জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানি উপছে লোকালয়ে লবণপানি ঢুকে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, পুকুর ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ১৩ হাজার ৪৬১টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। যার মধ্যে সম্পূর্ণ পানিবন্দি রয়েছে অন্তত ৮৩১টি পরিবার। যাদের নারী, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে খানিকটা মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
দূর্যোগ পরবর্তী সময় থেকে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান, উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন, সহকারী পুলিশ সুপার ডি-সার্কেল সাইফুল ইসলাম, থানা অফিসার ইনচার্জ ওবাইদুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েসসহ জনপ্রতিনিধিরা দূর্যোগপীড়িতদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগসহ সব ধরনের সহযোগীতা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানানো হচ্ছে। এছাড়া আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা দূর্গত এলাকায় ব্যাপকভাবে শুকনো
খাবার ও সুপেয় পানি পৌছে দেওয়া হচ্ছে বলে আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন। ঘূর্ণিজড় রেমালের কারনে স্থগীত ২৯ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৯ জুন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।