ডা. শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক ও কৌশলগত অবস্থান নির্দেশ করে। সমান মর্যাদা ও সম্মানের ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার অঙ্গীকার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সহযোগিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জামায়াতে ইসলামীর প্রতি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত ভারতবিরোধী অবস্থানের অভিযোগ সম্পর্কে ডা. শফিকুর রহমান এটিকে “ভিত্তিহীন” বলে অভিহিত করেছেন। তার বক্তব্যে “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়” নীতির উল্লেখ দলের একটি মধ্যপন্থী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রতি উদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে।
যদিও এই বার্তা আশাব্যঞ্জক, তবে এটি কতটা বাস্তবায়িত হবে তা দলের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করবে। অতীতে জামায়াতের কর্মকাণ্ড ও অবস্থানের কারণে এ ধরনের বক্তব্য কতটা বিশ্বাসযোগ্য হবে, তা জনগণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এটি জামায়াতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যেখানে তারা নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করে তোলার সুযোগ পাবে। বাস্তব কর্মসূচি ও নীতির সঙ্গে এই বক্তব্যের মিল থাকলে এটি আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে পারে।
ডা. শফিকুর রহমানের এই বক্তব্য জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত কিছু ধারণার বিপরীতে এক নতুন বার্তা বহন করছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সমান মর্যাদা ও সম্মানের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জামায়াতের ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে এটিকে “ভিত্তিহীন” ও “উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জোর দিয়েছেন, দলটি উদার ও গণতান্ত্রিক নীতির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় এবং তাদের রাজনীতির মূল ভিত্তি ইসলামিক আদর্শ হলেও তা কট্টর বা অসহিষ্ণু নয়।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিষয়ে দেওয়া তার বক্তব্যও গুরুত্বপূর্ণ। এটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি জামায়াতের অবস্থান সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দিতে চায়, যেখানে তিনি সমান অধিকার ও মর্যাদার কথা বলেছেন। তবে এর বাস্তব প্রমাণ হিসেবে জামায়াতের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে এই বক্তব্যের সামঞ্জস্য দেখাতে পারা জরুরি।
এই ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে জামায়াত তার রাজনৈতিক অবস্থানকে আধুনিক ও উদার হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। তবে এটি রাজনৈতিক কৌশল, নাকি বাস্তব নীতির প্রতিফলন, তা সময় ও কার্যক্রমের মাধ্যমেই প্রমাণিত হবে।