বাণিজ্যিকভাবে হরিণা চিংড়ি চাষ অর্থনীতিতে সফল হচ্ছে চাষিরা
এফ,এম, এ রাজ্জাক, পাইকগাছা, (খুলনা)
খুলনা জেলার পাইকগাছায় উপজেলার সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ির পাশাপাশি হরিণা চিংড়ির উর্বর ক্ষেত্র বহুদিনের। বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের চাকা সচল রাখতে অন্যতম মাধ্যম হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত বাগদা চিংড়ি। পাশাপাশি হরিণা চিংড়ি বাগদার বাজার দরের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। অত্যন্ত সুস্বাধু জাতের হরিণা চিংড়ির অর্থনৈতিক মূল্য অতি দ্রুততার সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাইকগাছার চিংড়ি ঘেরগুলোতে ইতোপূর্বে লবণাক্ত পানির সাথে হরিণা ডিম বা রেণু প্রাকৃতিকভাবে ঘেরে প্রবেশ পরবর্তী অজানাভাবে ঘেরে বৃদ্ধি পেত পরবর্তীর্তে বাজারজাত করতেন ঘের ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাগদা চিংড়ির মতো হরিণার চাষ বাণিজ্যিকভাবে হচ্ছে। বাগদা চিংড়ি অপেক্ষা হরিণা চিংড়ির বিচরণ ক্ষেত্র দুর্বল নয়, বাগদা অক্সিজেনহীন পরিবেশ বা দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে জীবন ধারণে ব্যর্থ হলেও হরিণা চিংড়ি সব ধরনের পরিবেশে বেড়ে উঠতে পারে পানিতে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকলেও এই প্রজাতির মাছের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সমস্যা হয় না। পাইকগাছায় বাস্তবতায় গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়ায় হরিণা চিংড়ির বাজার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সময়ে বাজারে হরিণা কেজি প্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাগদা সর্বাপেক্ষা বড় সাইজের কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায়। হরিণা চিংড়ি ও বিশ্ববাজারে বিশেষ অবস্থান সৃষ্টি করলেও দৃশ্যত দেশের বাজারে এর চাহিদা সর্বাধিক। পাইকগাছায় মৎস্য আড়তগুলো থেকে পাইকারি
ব্যবসায়ীরা হরিণা সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছে এবং ব্যবসা সফল হচ্ছে হরিণার বাজার। পাইকগাছায় সহ পাইকগাছার বিভিন্ন হ্যাচারি ও স্থানীয়পর্যায়ের হ্যাচারিগুলোতে উৎপাদিত চিংড়ি পোনা ঘের ব্যবসায়ীরা সংগ্রহ করে। অন্যদিকে হরিণা চিংড়ির রেণু সংগ্রহের মাধ্যম এখনপর্যন্ত কপোতক্ষ, মিনাজ, শীবসা সহ অপরাপর
নদীই এক মাত্র ভরসা হরিণার রেণু সংগ্রহের। নদীর
ধার দিয়ে ঠেলা জালের মাধ্যমে জেলেরা বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু সংগ্রহ করে তার মধ্যে হরিণা রেণু উল্লেখ যোগ্য, সুখবর বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানিরা দেশীয় প্রজাতির লবণাক্ত পানির হরিণা উৎপাদন ও চাষাবাদের লক্ষে দেশে, প্রথমবারের মতো গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে। তিন মাসের মধ্যে হরিণা বাজারজাতকরণের উপযুক্ত হয়। হরিণা চিংড়ি চাষিরা জানান, পোনা যথাযথভাবে পেলে উৎপাদন শতভাগ সম্ভব কিন্তু এক্ষেত্রে এক শ্রেণির অসাধু হরিণা রেণু ব্যবসায়ীরা সিকি বা সিপিতে হরিণা রেণু বলে অন্যকিছু দেয় যে কারণে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার কোনো কোনো সময় হাড়ি চুক্তিতে ও হরিণা রেণু ক্রয়বিক্রয় হয়। অতি ক্ষুদ্রাকৃতির বিধায় প্রতারণার করার খুব একটা কষ্ট সাধ্য ব্যপার না।
পাশাপাশি রেণু ব্যবসা অনুমান নির্ভর। দেশীয় প্রযুক্তিতে বাগদার মতো হরিণা রেণু উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হলে চাষিরা নিশ্চিতভাবেই হরিণা রেণু জেনে ঘেরে অবমুক্ত করতে পারবেন। হরিণা চাষ এবং বাজারজাত সেই সাথে ব্যবসা এই সংশ্লিষ্টতায় বিপুল সংখ্যক কর্মজীবী মানুষ জড়িত। পাইকগাছার হরিণা চিংড়ি চাষ বাণিজ্যিকভাবে আরও অধিক পরিমাণ উচ্চতায় পৌঁছাবে অর্থনীতিতে।