মারুফ এর পথচলা, শৈশবে শুরু তারুণ্যেও থেমে নেই
ফিরোজ আহমেদ নীলফামারী প্রতিনিধি
জ্ঞানচর্চার জন্য খবর দেখা এবং সংবাদপত্র ,গল্প,কবিতা লেখা ও পড়ার অভ্যাস গড়ে দিয়েছিলেন বাবা, কিন্তু একসময় এটাই ভালো লেগে যায় তার। খবরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ তাকে করে তোলে খবরেরই একজন। বলছি মারুফ হোসেন লিয়ন এর কথা।
২০১৭ সালে মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় স্হানিও কয়েকটি পত্রিকায় গল্প , কবিতা লেখালেখির মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যমের সঙ্গে যাত্রা শুরু হয় তার। পরের বছর শিশু সাংবাদিকতা শুরুর মাধ্যমে নিয়মিত কাজ শুরু করেন তিনি। অভিজ্ঞতার পাল্লা ভারি করতে সংবাদপত্র ও অনলাইন টিভিতে তিনি কাজ করেছেন৷ স্বীকৃতি সরুপ মিলেছে পুরষ্কারও।
মোঃ মারুফ হোসেন লিয়ন বর্তমান পড়াশোনা করছেন সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেণীতে, পাশাপাশি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে ‘হ্যালো’ বিভাগের শিশু সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত । মোঃ মারুফ হোসেন লিয়ন এর জন্ম নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার ধলাগাছ কয়া কিসামত গ্রামে। শৈশবের দিনগুলো কাটে সেখানেই। বাবা মোকছেদুল হক একজন সফল ব্যবসায়ী এবং মা একজন সুগৃহিণী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে লিয়ন তৃতীয়। সবার মতো প্রাইমারি স্কুলজীবন প্রাইভেট, স্কুল ও বাড়ির মধ্যেই বন্দি ছিল লিয়ন। আর প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায় শিক্ষাজীবনের পুরোটাই কেটেছে সৈয়দপুর সানফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজে। জ্ঞানচর্চার জন্য খবর দেখা আর সংবাদপত্র পড়ার অভ্যাস গড়ে দিয়েছিলেন বাবা।বাবা চাইতেন ছেলে সৃজনশীলতা ও মানবিক গুণাবলি নিয়ে আদর্শ মানুষ হয়ে বড় হবে। খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস থেকে স্কুলে পড়ার সময়েই তার লেখালেখির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। সেই আগ্রহের মাত্রা আরও বেড়ে যায় খবরের কাগজে নিজের নাম দেখে।
মারুফ হোসেন লিয়ন বলেন আমি ছোট বেলা থেকেই লেখালেখি পছন্দ করতাম পাশাপাশি কবিতা গল্প লিখতাম , স্হানিও পত্রিকার পাতায় নিজের লেখা দেখতে পেয়ে অনেক আনন্দ হত। এসব দেখে লেখার প্রতি আরো অনুপ্রেরণা তৈরি হতো।
২০১৭ সালে তখন সে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু সাংবাদিকতার সাইট হ্যালোতে যুক্ত হন সে । ৪ বছর পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা হিসেবে শিশু সাংবাদিকতা করেন। শিশুদের সঙ্গে অন্যায়, অধিকার থেকে বঞ্চিত করা, শিশু শ্রম,তাদের দুর্ভোগ এবং নানা চাওয়া পাওয়া ওঠে এসেছে তার প্রতিবেদনে। এ প্রসঙ্গে মারুফ হোসেন লিয়ন বলছিলেন, ‘শিশু সাংবাদিকতা যেহেতু ভলান্টিয়ারিং ওয়ার্ক, তাই আমার মাথার ওপর তেমন কোনো চাপ ছিল না। উইলিংলি কাজ করতে পারতাম। তাই পাশাপাশি আরও কাজের অভিজ্ঞতা নেওয়ার ইচ্ছাও তৈরি হয় আমার।
শেখার বয়সটাকে আরও বেশি অর্থবহ করতে তুলতে কাজের সঙ্গেই লেগে থাকতেন তিনি। কোনো সুযোগ পেলে সেটা হাতছাড়া করেননি। নতুন আরেকটি গণমাধ্যমে কাজ করার ইচ্ছা থেকে তিনি যুক্ত হন স্হানিও অনলাইন টিভি সৈয়দপুর টিভি ও আপডেট টিভিতে সেখানে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিও নিউজ করেছে।
এদিকে সে আরো বলেন আমার এইচএসসি পরীক্ষা ঘনিয়ে আসায় একটু বেশি করে পড়াশোনায় মনযোগী হতে হচ্ছে । বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, ইন্টারনেটে বুঁদ হয়ে থাকা কিংবা অন্যকোনো ভাবে সময় কাটানোর কোনো সুযোগই হচ্ছে না তার। কাজের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে পেতেন তিনি। পড়াশোনার সঙ্গে সমান তালে কাজের মাঠেও সক্রিয় থাকেন তিনি। তার রোজকার দিনলিপি বেশ কর্মব্যস্তই থাকত। সে বর্তমান পড়াশুনার পিছনে ঝুঁকছে।
মারুফ হোসেন লিয়ন এর মা ফাতেমা বেগম বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত আমি নিজেই ছেলেকে পড়ালেখা করিয়েছি। আমি বুঝতে পেরেছি আমার ছেলের যথেষ্ঠ মেধা আছে। সে ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি পছন্দ করতো কবিতা গল্প বেশি বেশি পড়তো সে নিজে নিজেই গল্প লিখতো ।সে তার মেধাতেই আজ এতোদূরে যাওয়ার তাঁর সুযোগ হয়েছে। আমি চাই আমার ছেলে মানুষের মতো মানুষ হয়ে মানুষের সেবা করবে।
এলাকাবাসী তার এসব কাজে খুবই আনন্দিত