যে ত্রুটিযুক্ত পশুর কুরবানী মকরূহ
হাফেজ মোঃ আসলাম, স্টাফ রিপোর্টার:

১। কান কাটা বা শিং ভাঙ্গা। এর দ্বারা কুরবানী মকরূহ। তবে সিদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ, এতে মাংসের কোন ক্ষতি বা কমি হয় না এবং সাধারণতঃ এমন ত্রুটি পশুর মধ্যে বেশী পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। কিন্তু যে পশুর জন্ম থেকেই শিং বা কান নেই তার দ্বারা কুরবানী মকরূহ নয়। যেহেতু ভাঙ্গা বা কাটাতে পশু রক্তাক্ত ও ক্লিষ্ট হয়; যা এক রোগের মত। কিন্তু জন্ম থেকে না থাকাটা এ ধরনের কোন রোগ নয়। অবশ্য পূর্ণাঙ্গ পশুই আফযল।

২। লেজ কাটা – যার পূর্ণ অথবা কিছু অংশ লেজ কাটা গেছে তার কুরবানী মকরূহ। ভেড়ার পুচ্ছে মাংসপিন্ড কাটা থাকলে তার কুরবানী সিদ্ধ নয়। যেহেতু তা এক স্পষ্ট কমি এবং ইস্ফিত অংশ। অবশ্য এমন জাতের ভেঁড়া যার পশ্চাতে মাংস পিন্ড হয় না তার দ্বারা কুরবানী শুদ্ধ।

৩। কান চিরা, দৈর্ঘ্যে চিরা, পশ্চাৎ থেকে চিরা, সম্মুখ থেকে প্রস্থে চিরা, কান ফাটা ইত্যাদি।

৪। লিঙ্গ কাটা। অবশ্য মুষ্ক কাটা মকরূহ নয়। যেহেতু খাসীর দেহ হূষ্টপুষ্ট ও মাংস উৎকৃষ্ট হয়।

৫। দাঁত ভাঙ্গা ও চামড়ার কোন অংশ অগভীর কাটা বা চিরা ইত্যাদি।

কুরবানী সিদ্ধ হওয়ার তৃতীয় শর্ত হল মালিকানা। অর্থাৎ, কুরবানীদাতা যেন বৈধভাবে ঐ পশুর মালিক হয়। সুতরাং চুরিকৃত, আত্মসাৎকৃত অথবা অবৈধ ক্রয়-বিক্রয়ে ক্রীত পশুর কুরবানী সিদ্ধ নয়। তদনুরূপ অবৈধ মূল্য (যেমন সূদ, ঘুস, প্রবঞ্চনা প্রভৃতির অর্থ) দ্বারা ক্রীত পশুর কুরবানীও জায়েয নয়। যেহেতু কুরবানী এক ইবাদত যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা হয়। আর কুরবানীর পশুর মালিক হওয়ার ঐ সমস্ত পদ্ধতি হল পাপময়। আর পাপ দ্বারা কোন প্রকার নৈকট্য লাভ সম্ভব নয়। বরং তাতে দূরতক্ষ সৃষ্টি হয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র ব্যতীত কিছু গ্রহণ করেন না।[1]

কুরবানীর পশু নির্ধারণে মুসলিমকে সবিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত, যাতে পশু সর্বগুণে সম্পূর্ণ হয়। যেহেতু এটা আল্লাহর নিদর্শন ও তা’যীমযোগ্য দ্বীনী প্রতীকসমূহের অন্যতম। যা আত্মসংযম ও তাকওয়ার পরিচায়ক। আল্লাহ তাআলা বলেন,

(ذلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللهِ فَإِنَّهَا مَنْ تَقْوَى الْقُلُوْبِ)

অর্থাৎ, এটিই আল্লাহর বিধান এবং কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীর সম্মান করলে এতো তার হূদয়ের তাকওয়া (ধর্মনিষ্ঠা)। (সূরা হজ্জ্ ৩২ আয়া

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *