রাজস্ব ক্ষতি ৬ কোটি, দুদকের অনুসন্ধান শুরু
সাতক্ষীরা, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) অনুসন্ধান শুরু হয়েছে সদর উপজেলার রইচপুরের উদ্ধারকৃত ৫৮৩ বিঘা খাস জমি জবর দখলের। অভিযোগের প্রধান তীর সাতক্ষীরা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালুর দিকে। কাউন্সিলর কালুর প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে কতিপয় ব্যক্তি গত ৭ বছরে প্রায় ৬ কোটি টাকা এসব জমি লীজ দিয়ে উত্তোলন করেছেন। যার কোন অংশ সরকারী কোষাগারে জমা হয় নি। ফলে সরকার রাজস্ব হারিয়েছে ৬ কোটি টাকা। সরকারী খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে ভোগ করার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে জানানোর জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ১৯ মে দুদকের মহাপরিচালক মীর মোঃ জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত পত্রে উক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালে তৎকালিন জেলা প্রশাসক একেএম মহিউদ্দীন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পলাশপোল মৌজায় ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত ১২৮০, ৪২৩৮, ৮২৩১, সাবেক দাগ ১৪০০, রইচপুর এলাকার ৫৮৩ বিঘা খাস সম্পত্তি উদ্ধার করেন। উক্ত সম্পত্তি মৌখিকভাবে দেখাশোনা করার দায়িত্ব প্রদান করা হয় পৌর ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু সহ কয়েকজনের উপর। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উক্ত সম্পত্তি নিজে ৭৫ বিঘা দখলে রেখেছেন কালু। কালুর সহযোগি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহুল কুদ্দুস ৪০ বিঘা সম্পত্তি ঘের করেন। বাকী সম্পত্তির মধ্যে ফজলুর কাছে ২ বিঘা, আলমগীরের কাছে ৬ বিঘা, কামরুলের কাছে ২ বিঘা, এতিমের কাছে ৭ বিঘা, মাসুমের কাছে ৩ বিঘ,ি আব্দুস সাত্তারের কাছে ১০ বিঘা, মিজান-হাফিজুলের যৌথ ১০ বিঘা সহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছে লীজ দিয়েছেন কালু-কুদ্দুস গং। এসব জমির হারী বাবদ বিঘা প্রতি ১৪ হাজার টাকা করে উত্তোলন করেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি রুহুল কুদ্দুস। ৭ বছরে যার মোট পরিমান দাড়ায় ৫ কোটি ৭১ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। এসব টাকা রুহুল কুদ্দুস ও জাহাঙ্গীর হোসেন কালু যোগসাজসে ভাগবাটোয়ারা করে নেন। উত্তোলনকৃত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয় না। সরকারি সম্পত্তি অবৈধ দখল করে এবং লীজ বানিজ্য করে পৌর ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু এতদিনে কোটিপতি বনে গেছেন। কালু গং প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে এবং সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন। তবে দুদক এ বিষয়ে সজাগ হওয়ায় কালুর দুর্গে ধ্বস নামনে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। দুদকের উক্ত চিঠির বিষয়ে কার্যত ফেসে যাচ্ছেন তিনি। কালু গংয়ের কাছ থেকে উক্ত সম্পত্তি উদ্ধার করে সরকারের অনুকূলে নেওয়ার দাবি সচেতন মহলের।