শনিবার , ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - বর্ষাকাল || ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

রানীশংকৈলে মুন্সি আব্দুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৩

রানীশংকৈলে মুন্সি আব্দুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসায় নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে

রানীশংকৈল( ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার অন্তর্গত ৩ নং হোসেনগাঁও ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের চৌড়ল পড়ায় অবস্থিত মুন্সি আব্দুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে গত ২৬/০৯/২৩ ইং তারিখে মোঃ মফিজ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়ার রহমানের কাছে দাখিল করেন এবং অভিযোগের কপি বিভিন্ন দফতরে ডাকবিভাগের মাধ্যমে প্রেরণ করেন।
এই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন চৌড়ল মুন্সি আব্দুল্লাহ দাখিল মাদ্রাসায় আলোচনার মাধ্যমে আমাকে মাদ্রাসার সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করেন ।কিন্তু উক্ত মাদ্রাসা সুপার মাদ্রাসার কোন কাজকর্মে আমাকে অবহিত না করিয়া চালাকি করিয়া আমার স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে ভিন্ন এলাকার মফিজুর রহমান কে ভুয়া সভাপতি তৈরি করিয়া মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করিয়া আসিতেছে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে গত ১৬/০৯/২৩ ইং তারিখে অত্র মাদ্রাসা তিনজন কর্মচারী অবৈধভাবে নিয়োগ গ্রহণ করে ১৭/০৯/২৩ ইং তারিখে তড়িঘড়ি করে যোগদান করে ও নিয়োগ বাণিজ্য করে যাহার টাকার পরিমাণ ৩০,০০০০(ত্রিশ লক্ষ) টাকা হাতিয়ে নেয়। এইবিষয়ে সুপার সাহেব মাদ্রাসার কমিটি সদস্যদের সাথে লোক নিয়োগ ব্যাপারে রেজুলেশন করিয়া লোকের অবচরে এলাকায় প্রচার না করিয়া গোপনে নিজের লোক নিয়োগ করিয়াছে এবং ২০১৪ সাল হইতে অত্র ২০২৩ ইং সাল পর্যন্ত কোন হিসাব অত্র মাদ্রাসার কমিটিকে অবগত না করিয়া নিজের ইচ্ছেমতো মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছেন । বিভিন্ন অনুদান মাদ্রাসার গাছ জেলা পরিষদ থেকে অবদান প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করিয়াছেন।

এ বিষয়ে অভিযোগের পরিপেক্ষিতে গত ০১/১০/২৩ ইংতারিখ রোজ রবিবার দুপুর ১ঘটিকার সময় সরজমিনে গিয়ে অত্র মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন নিয়োগ পরীক্ষা ও মাদ্রাসার কমিটির ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।
অত্র মাদ্রাসার দাতা সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন সুপার আমাকে বলেছে তুমি কমিটিতে আছো তবে আমি আজও পর্যন্ত কোন জায়গায় স্বাক্ষর করি নাই।
মাদ্রাসার সুপারের সাথে কথা বলার জন্য মাদ্রাসায় গেলে উনাকে মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি।
পরে অফিস সহকারি ও অভিভাবক সদস্য মোঃ নওশাদ আলী সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান নিয়োগ বিধি মোতাবেক হয়েছে এবং আগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন করে কমিটি করা হয়েছে।তার কাছে নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের নামের তালিকা ও নতুন কমিটির তালিকা চাওয়া হলে তিনি বলেন আমার কাছে তালিকা নেই এটি মাদ্রাসার সুপারের কাছে রয়েছে।
সেই দিনেই সন্ধ্যাবেলায় মাদ্রাসা সুপার মোঃ খলিলুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি মাদ্রাসার কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি এবং নিয়োগ বিষয়টি বিধি মোতাবেক করা হয়েছে। কিন্তু তার কাছে নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের তালিকা ও নতুন কমিটির তালিকা চাওয়া হলে তিনি বলেন এগুলো মাদ্রাসা অফিস সহকারি মোঃ নওশাদ আলীর কাছে আছে।
অভিযোগকারি মোঃ মফিজ উদ্দিনের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনারা যদি বলেন এটা ঠিক তাহলে ঠিক আর যদি বলেন এটি ঠিক নয় তাহলে ঠিক নয়।
এই বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তবারক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন নিয়োগ বিধি মোতাবেক হয়েছে এবং মাদ্রাসার কমিটির ব্যাপারে আমি কিছু জানি না আমি এখানে নতুন এসেছি। তিনি আরও বলেন মাদ্রাসা সুপার যদি দুর্নীতির সাথে বা কোন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকে সেটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহরিয়ার রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ৩নং হোসেনগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ১৯/১০/২৩ইং তারিখের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ করেছেন।