সাতক্ষীরার নলতায় আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠালগ্নের একটি হৃদয়স্পর্শী ঘটনা বর্ণনা
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি সাতক্ষীরা।
একদা একদিন মুর্শিদ মাআওলা হজরত খানবাহাদুর আহছানউল্লা (র.আ) তাঁর ভক্তদের নিয়ে বসে আছেন। হঠাৎ মুর্শিদ মাওলা (র.আ) বললেন আমি একটা মিশন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। তখন ভক্তবৃন্দরা বলে উঠলেন বাপজান মিশন মানে?? মুর্শিদ মাওলা ( র. আ) বললেন এটা হবে এমন একটা প্রতিষ্ঠান যেটি দুস্থদের সাহায্য করবে,, মৃত ব্যক্তির সৎকারের ব্যবস্থা করবে,, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন সহ আরও বিভিন্ন দিক তিনি উল্লেখ করেছিলেন। এবার মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) ভক্তদের উদ্দেশ্যে করে বললেন তোমরা সবাই মিলে ভাবো মিশনের নাম কি রাখা যায়,,,কালকে সবাই জানাবে। পরেরদিন আবারও সবাই এক জায়গায় সমবেত হলেন। তখন সবাই বললেন বাপজান আমরা নাম খুঁজে পেয়েছি। তখন মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) বললেন,,, হ্যাঁ বলো। তখন উপস্থিত সবাই বললেন,, মিশনের নাম হবে আহছানিয়া মিশন। মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) বললেন,, না এটা রাখতে হবে না। তখন সমবেত সবাই বললেন, না বাপজান এ নাম আমরা ছাড়ব না। অনেক জোরাজুরির পরে ঠিক হয় নাম হবে আহছানিয়া মিশন। অতঃপর কথা হলো মিশন চলবে কিভাবে? মিশনের আয়ের উৎস কি?? মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) বললেন,,এক কাজ করা যেতে পারে, আমরা গ্রামের প্রতিটি মানুষের বাড়িতে একটি করে মাটির খোপ রেখে আসবো। আমার মায়েরা যখন রান্না করতে যাবে। তখন প্রতিবার এক মুষ্টি করে চাল ঐ খোপে রাখবে। আমরা সেটা প্রতি সপ্তাহ বা মাসে এক বার গ্রামে গিয়ে সংগ্রহ করে নিয়ে আসবো। এ কথায় অনুসারে প্রতিটি বাড়িতে খোপ রেখে আসা হলো। অতঃপর একদিন মুর্শিদ মাওলা ( র. আ) বললেন, চলো আজ আমরা গ্রামে গিয়ে চাল সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। সবাই বের হলেন চাল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) এর সাথে।এবার একটা বাড়ির সামনে উঠানে গিয়ে দাঁড়ালেন সবাই। তখন বাড়ির মহিলারা সবাই ঘরের ভেতরে ছিলেন। তখন মুর্শিদ মাওলা (র.আ) উঠানে দাঁড়িয়ে বললেন, মা তোমাদের দ্বারে ফকির এসেছে। এবার তাঁকে বিদায় দাও। ঘর থেকে বাইরে এসে মহিলারা দেখলেন মুর্শিদ মাওলা ( র.আ) দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা মুর্শিদ মাওলা ( র. আ) কে দেখে কাঁদতে কাঁদতে তাঁর কদম মোবারক জড়িয়ে ধরে বলছেন, বাপজান আপনি এ কি বলছেন। এভাবেই আহছানিয়া মিশনের অগ্রযাত্রা শুরু হয়। এ মিশন আল্লাহর মিশন, এ মিশন মুর্শিদ মাওলার মিশন। তাই মিশন সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আকুল আবেদন এই যে, এ মিশন কখনই যেন মুর্শিদ মাওলার প্রতিষ্ঠাকালীন আদর্শ ও উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত না হয় ।