সনাতনজাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানিতে ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ করায় একদিন বন্ধ ছিল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। তবে বুধবার দুপুর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর কতৃপক্ষ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের অপারেশন ম্যানেজার কামাল খান।তিনি জানান, বুধবার দুপুর ২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এক ঘণ্টায় রেকর্ড ৫১ ট্রাক ভারতীয় পেঁয়াজ এবং ৯ ট্রাক আলু বন্দরে প্রবেশ করেছে।তিনি বলেন, মূলত রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকদের আন্তরিকতার মাধ্যমেই কোন পণ্য কী পরিমাণ বাংলাদেশে ঢুকবে তা নির্ধারণ হয়ে থাকে।
ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণেই বেলা ২টা থেকে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করছে তার ৯০ ভাগই পেঁয়াজের ট্রাক, ৫ ভাগ আলুর এবং অন্যান্য পণ্যের ৫ ভাগ ট্রাক।স্থলবন্দর দিয়ে আজ সারাদিনে ১০০ ট্রাকের বেশি আলু এবং ২ শতাধিক পেঁয়াজ আমদানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।আরিশা ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী আলমগীর জুয়েল বলেন, আলু আমদানির বিষয়ে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সারাদিনে ১০০ ট্রাকের বেশি আলু আমদানি হতে পারে।সোনা মসজিদের অন্যতম বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান শুভ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ইসমাইল হোসেন বলেন, চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই অন্যান্য বন্দরের ন্যায় সোনামসজিদ বন্দরে এর প্রভাব পড়তে আরম্ভ করে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ ও আলু ভর্তি কোনো ট্রাক প্রবেশ করেনি। তবে বুধবার দুপুর থেকে আগের এলসি করা পেঁয়াজগুলো দিচ্ছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।ভারতের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আরআই এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ইকবাল হোসেন ফোনে জানান, চলমান জটিলতায় ভারতের মোহদীপুর এলাকায় ২৫০টি পেঁয়াজের এবং ১০০টি আলুর ট্রাক আটকে রয়েছে। তবে ট্রাকের অনলাইন স্লট বুকিং বন্ধ থাকায় নতুন করে কোনো পণ্য ট্রাকে লোড করা হচ্ছে না।
বেলা ১২টার পর থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য অপেক্ষায় থাকা এসব ট্রাক পাঠানো আরম্ভ হয়েছে।এদিকে দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত। আর আলু ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। বুধবার সকালে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম আরও ৫ টাকা।শিবগঞ্জ কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল বলেন, গত সোমবার ৭৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। মঙ্গলবার কিনতে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। তাই বিকেল থেকে ৯৫ টাকা কেজি বিক্রি করছি। বুধবার কয়েকজনের কাছে পেঁয়াজ না পাওয়ায় ৫ টাকা বেশি দিয়ে কিনলাম। তবে বন্দরে পেঁয়াজ আসার খবরে দাম না কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে।
আতাউর রহমান নামে খুচরা আলু ব্যবসায়ী বলেন, পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকলে হয়ত আবার কমবে পেঁয়াজ ও আলুর দাম এর আগে সোমবার বিকেলে ভারতে উৎপাদিত আলু ও পেঁয়াজ অন্য দেশে সরবরাহ করবে না বলে রপ্তানিতে স্লট বুকিং বন্ধ করে দেয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এই এলাকায় বৃদ্ধি পায় আলু ও পেঁয়াজের দাম।