মার্চ ২৫, ২০২৫
Home » অবহেলিত মৃতপ্রায় এক জল পথ তুরাগ নদ
1000105153

মোঃ মাহবুবুর রহমান সোহেল, স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের ঢাকা ও গাজীপুর জেলার অংশ নিয়ে তুরাগ নদীর বিস্তৃতি। তুরাগের দৈর্ঘ্য ৬২ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৮২ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক তুরাগ নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং ২৫। এটি ঢাকা শহরের সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া ৪টি নদীর মধ্যে ১টি। এই নদীর গভীরতা ১৩.৫ মিটার। নদী অববাহিকার আয়তন প্রায় ১ হাজার ২১ বর্গ কিমি।
একসময় এই তুরাগ নদীকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্যের এক অপার কর্মযজ্ঞ থাকলেও আজ তা প্রায় নেই বললেই চলে।নদীর দুই পাশ অবৈধ দখল,যত্রতত্র মনুষ্য বর্জ্য, শিল্প কারখানার দূষিত পানি ও বর্জ্য মাছে ভরা একসময়কার এ নদীকে আজ করেছে মাছ শুন্য।তুরাগের বিস্তৃত নৌপথ ব্যবহার করে একসময় হাজার হাজার মানুষের ব্যবসা-বাণিজ্য থাকলেও আজ সময়ের পরিক্রমায় দূষিত নদীতে জায়গায় জায়গায় পলি জমে নাব্যতা কমে নৌরুটটি হয়েছে পুরোপুরি বন্ধের উপক্রম।
বিশাল এই নৌরুটের গাজীপুরের কড্ডা থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত নৌরুটের আশুলিয়া বাজার,তৈয়বপুর, নর্থ টাউন,ধনঞ্জয়খালী,কাশিমপুর জেলেপাড়া,মাইমুন টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন জায়গায় ডুবো চরের সৃষ্টি হয়ে পণ্যবাহী নৌযান,বাল্কহেডসমূহ চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে বিপত্তির। এ বছর শুষ্ক মৌসুম শুরুর পর থেকেই বারবার নৌরুটের বিভিন্ন অংশে বাল্কহেড ও পণ্যবাহী নৌযান আটকে থাকার খবর প্রচার হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। সাধারণ যাত্রী থেকে নৌযান চালক এমনকি ইজারাদারসহ সকলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অনুরোধ জানানোর পরও নদীর বুকে জেগে উঠা ডুবোচর গুলোকে ড্রেজিং বা খননের কোন উদ্যোগ নেয়া হয় নি।ফলে এ পথটি এখন বাল্কহেড ও বড় নৌযানের জন্য চলাচলের প্রায় অযোগ্য।অনিশ্চয়তা মাথায় নিয়ে যেসব নৌযান এ পথে চলছে তারাও মাঝেমধ্যেই দিনের পর দিন বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকছে।
এ যেমন গত ৪ দিন ধরে এম.ভি হামিম-২ এবং সাইফুল এন্ড শান্ত নামের দুটি বাল্কহেড আটকে আছে নদীর আশুলিয়া বাজার ও জেলেপাড়া অংশে।৪ দিনে হাজার হাজার টাকা লসে থেকে আফসোসের সুরে বাল্কহেড মাষ্টার আবেদ বললেন,’আমরা এই নদীপথটিতে মাঝেমধ্যেই আটকে যাচ্ছি।আর্থিক ক্ষতির মুখে থেকেও এ পথটি ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম।কিন্তু আয়ের অনিশ্চয়তার কারণে গত ৪ দিন আটকে থাকার পর বাল্কহেডের দুজন কর্মচারী চাকুরী ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে রেখেছি ওদের।চেষ্টা করছি নদীর এ অংশ থেকে বের হওয়ার।’
এ বিষয়ে এ নৌরুটের ইজারাদার মৃধা জুয়েল রানা বলেন,’আমার ইজারা নেয়ার শুরু থেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।এ সমস্যাগুলোর সমাধান চেয়ে বিআইডব্লিউটিএকে বারবার লিখিতভাবে জানালেও নাব্যতা সংকটসহ অন্যান্য সমস্যাগুলোর সমাধানে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।’

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *