মার্চ ২১, ২০২৫
Home » কালিহাতীতে অপহরণচক্রের সদস্য গ্রেফতার, ভিকটিম উদ্ধার
IMG-20250126-WA0005(2)

শুভ্র মজুমদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় অভিনব কৌশলে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টাকালে এক অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাত্রীবেশে প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণের পর বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ে ইউনুস আলী (৩২)। প্রযুক্তির সহায়তায় মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তবে, তার দুই সহযোগী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ আপাতত তাদের পরিচয় প্রকাশ করেনি।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া জানান, ২৫ জানুয়ারি বিকেলে ঘাটাইল উপজেলার হাটকয়রা গ্রামের মো. হাসান (৩০) এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি প্রাইভেটকারে ওঠেন। প্রথমে করটিয়া পর্যন্ত গাড়িটি স্বাভাবিকভাবেই চললেও পরে চালক ও দুই অপহরণকারী পরিকল্পিতভাবে গাড়ির গতিপথ পরিবর্তন করে। একপর্যায়ে ভিকটিমকে মারধর করে ও তার পরিবারের কাছে ১,৫, ০০০০ টাকা মুক্তিপন দাবী করে এবং বিকাশের মাধ্যমে ২৫,০০০ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।
ভুক্তভোগীর পরিবার বিষয়টি দ্রুত পুলিশকে জানালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করে এবং দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে। বিকাশ থেকে টাকা ক্যাশ আউট করার সময় ২৫ জানুয়ারির রাতে মির্জাপুর উপজেলার পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশ অপহরণকারী ইউনুস আলীকে (৩২) গ্রেফতার করে। তিনি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার সারপুকুর সর্দারটারী গ্রামের মৃত আহাদ আলীর ছেলে।
অভিযানের সময় অপহৃত হাসানকে উদ্ধার করা হয় এবং বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো ২৫,০০০ টাকা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়। অপহরণের ঘটনায় ভিকটিমের খালাতো ভাই মো. সাকিব আল হাসান কালিহাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৫, তারিখ: ২৬/০১/২৫)। মামলার ভিত্তিতে ওসি আবুল কালাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে অংশ নেন এসআই ইমাম হোসেন, এএসআই রেজাউল, হারুন অর রশিদ ও শহিদুল ইসলামসহ পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা।
পুলিশ জানিয়েছে, চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ধৃত আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। পুলিশের এমন দ্রুত ও সফল অভিযানে স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে হাসানকে দ্রুত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এলাকাবাসী দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধের সাহস না পায়।
এই অভিযানের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবারও প্রমাণ করল, অপরাধীরা যতই চতুর হোক না কেন, প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ এবং পুলিশি দক্ষতা দিয়ে তাদের ধরা সম্ভব। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের এই সফল অভিযান তাদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *