এপ্রিল ২৭, ২০২৫
Home » খুলনার রূপসায় নদী দখল করে গড়ে উঠেছে ইটভাটা; জমি উদ্ধারের নেই কোন সরকারি তৎপরতা
IMG-20250131-WA0006

ষ্টাফ রিপোর্টার 

খুলনার রূপসায় ভৈরব নদীর তীরে সরকারি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য ইটভাটা। এ জন্য কোন প্রকার অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেনি ভাটা মালিকরা। জমি বাবদ  বাড়তি কোন খরচ না থাকায় বেশিরভাগ ভাটা মালিক বেছে নিয়েছেন নদী তীরবর্তী চর ভরাটি জায়গা। তাছাড়া এ সমস্ত ডাটা এলাকায় হাজার হাজার লোকের বসবাস, ভাটায় পোড়া ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে। ভাটায় পোড়া কয়লার বিষাক্ত পানি ও ফেলছে তারা নদীতে। তাছাড়া পুরনো ইটের রাবিশ,আধলা নদীতে ফেলে জমি দখল করছে এতে করে নদীর জোয়ার ভাটায় বাধাগ্রস্ত হয়ে চর পড়ছে এতে ভাটা মালিকরা লাভবান হলেও সংকুচিত হচ্ছে নদী। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে স্থানীয় পরিবেশ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, খুলনার রূপসা উপজেলায় ভৈরব নদীর পাড়ে ২০ টি ইটভাটায় প্রায় ৩০ একর সম্পত্তি দখল করেছে ভাটা মালিকরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাবেক চেয়ারম্যান ইসহাক সরদারের  (আজাদ ব্রিকস) ০৬টি ,মোল্যা এনামুল কবির ও দিলুর (এসবিএম ব্রিকস)৭ টি, সরোয়ার হাওলাদার এর( ফারুক ব্রিকস),০৪টি। এমনকি এরা অন্যের ভাটা ভাড়া নিয়েও নিজেদের ব্র্যান্ডে ইট ভাটা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। এ সমস্ত ইট ভাটা গুলো জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। এসব ইটভাটার বেশিরভাগেরই কোন অনুমোদন নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর পরিবেশ বিরোধী এ কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা। এই এলাকায় ইট ভাটা তৈরিতে পরিবেশের ছাড়পত্র পাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রূপসা উপজেলার আঠারোবেকি নদীর চর দখল করে বেশ কয়েকটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে, এরা নদীর মাটি কেটে সাভার করে দিচ্ছে।আঠারবেকি নদীকাটার সময় যে মাটি নদীর তীরে রাখাছিল সে মাটি তো নাই বরং নদীর তীরে বড় বড় পুকুর কেটে  এসব বাঁধ ধ্বংশ করে দিচ্ছে,য়ার ফলে অতিবৃষ্টি বা জলোচ্ছাসে  জনবসতি ও ফসলাদি প্লাবিত হবার সম্ভবনাব দেখা দিয়েছে। এলাকা জনবসতিপূর্ণ ও স্কুল, কলেজ, মসজিদ ও মাদ্রাসা থাকার কারণে এলাকার আবাল বৃদ্ধা বর্ণিতা ও কোমলমতি ছেলেমেয়েরা কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারেনা ভাটার পোড়া ধোঁয়ায়।
অত্র অঞ্চলের মানুষের বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ হাঁপানি বা অ্যাজমার মতো মারাত্মক রোগে ভুগছে এলাকার মানুষ। সরকারি ম্যানুয়ালে আছে স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না কিন্তু এখানে কোন আইন কানুনের বালাই দেখছেনা এলাকাবাসী। সারাদেশে ইটভাটা প্রস্তুতিতে অনিয়ম ও পরিবেশ দূষণের দায়ে বিভিন্ন ইট ভাটায় অভিযান পরিচালিত হলেও রূপসা উপজেলা প্রশাসন  এখনো পর্যন্ত এ এলাকায় কোন ধরনের অভিযান পরিচালনা করেন নাই।
ইট ভাটা পরিচালনার বিষয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দ রেজওয়ান হাসান বলেছেন, পরিবেশ দূষণের আওতামুক্ত থেকে জিকজাক ইটভাটা গুলো পরিচালিত হবে ।কিন্তু বাস্তবে এটার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। এলাকাবাসী বলছে ইট ভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে পারেনা। তাছাড়া তারা আরো বলে এরা এই অবৈধ ভাটা পরিচালনার জন্য যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের সাথে সখ্যতা গড়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এ অবৈধ ভাটা পরিচালনা করে থাকে।
এ বিষয়ে সমাজের সচেতন মহলের একটাই দাবি মানবিক দিক বিবেচনা করে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে ইটভাটা স্থাপনের জন্য ফাঁকা খোলা জায়গা নির্ধারণ করা উচিত। এবং যে সমস্ত ইট ভাটা গুলো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে উঠেছে এগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত এবং পরিবেশের ছাড়পত্র না দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে বিনীত অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *