মার্চ ১৫, ২০২৫
Home » দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর নিয়ে বিশ্লেষকদের মতামত
image - 2025-02-08T130155.344

মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার

ছাত্র সমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনার ভাষণের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন থেকে হামলা-ভাঙচুরের সূচনা হয়। পরে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। দুই দিন ধরে চলমান এই ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। ঘটনার জন্য দায়ী কে? বিভিন্ন বিশ্লেষক ও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা রয়েছে। কেউ কেউ এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসেবেও দেখছেন, যার মাধ্যমে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে বহির্বিশ্বে উপস্থাপন করা হতে পারে।

অন্যদিকে, আরেকটি পক্ষ মনে করছে, শেখ হাসিনার নাম ব্যবহার করে এই বিশৃঙ্খলাকে জায়েজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশিষ্টজনেরা সতর্ক করেছেন, এসব ঘটনা নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে দেশ আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে এবং পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। নৈরাজ্যের পেছনের কারণ কী? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা মনে করেন, ভাঙচুরের পেছনে গভীর ক্ষোভ রয়েছে। তিনি বলেন, “এই কমিউনিটি বারবার প্রতারিত হয়েছে এবং ন্যায়বিচারের অভাবে দীর্ঘদিনের হতাশা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।”

মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেনও মনে করেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং আন্দোলনে হতাহতদের পরিবারের প্রতি উদাসীনতাই এই বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ। ফ্যাসিস্ট প্রতীকের ওপর হামলা? দার্শনিক ও সমাজ বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেন, “এই হামলা মূলত জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী বাস্তবতায় ফ্যাসিস্ট স্থাপনার ওপর আঘাত এসেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ একে অন্যভাবে দেখছেন। তিনি বলেন, “সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা উসকানির কথা বলে এসব ঘটনাকে বৈধতা দিচ্ছেন।”

৩২ নম্বরের বাড়ি রক্ষা করা উচিত ছিল?সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিকের মতে, শেখ হাসিনার ভাষণ স্বাভাবিক ঘটনা হলেও তা দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞে রূপ নেয়ায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, “৩২ নম্বরের বাড়ি ইতিহাসের অংশ। সরকারকে এটি রক্ষা করা উচিত ছিল। দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র? ফরহাদ মজহার মনে করেন, দিল্লির সহযোগিতায় বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে। লেখক ফাহাম আবদুস সালাম বলেন, “শেখ হাসিনা ইচ্ছাকৃতভাবে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন, যাতে ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বকে বোঝানো যায়, বাংলাদেশ সংকটের মধ্যে আছে।”

অন্যদিকে, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা মনে করেন, “ভারত ও পাকিস্তানকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া উচিত নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা বিভিন্ন স্থানে হামলার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, “সরকার এই ঘটনাগুলোকে বরদাশত করেছে, যাতে নজর অন্যদিকে সরানো যায়। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, “যখন সারা দেশে একের পর এক হামলা হয়, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা উদ্বেগজনক।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “এখন যা চলছে তা মবতন্ত্র। একবার এটি উৎসাহিত হলে, গণতন্ত্রে ফেরা কঠিন হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, নইলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *