মে ১৫, ২০২৫
Home » বাগেরহাটে অবৈধ ইটভাটা চলছে গোপন অনুমতিতে;উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি
IMG-20250209-WA0000

ষ্টাফ রিপোর্টা

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও মোল্লাহাটে সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছে এতে করে ব্যাপকভাবে বায়ু দূষণ হচ্ছে। দূষিত বায়ুর প্রভাবে কৃষি জমি পরিবেশ জীববৈচিত্র্য ও জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে।  সরজমিন অনুসন্ধানে দেখা যায় মোরেলগঞ্জের বদনিভাঙ্গা এলাকায় বন্ধ হয়ে যাওয়া জিয়া ব্রিকস চালিয়ে যাচ্ছে মুসলিম ব্রিকস নামে যার মালিকানায় আছে শাহ আলম শেখ, হোগলাগাছা ইরা ব্রিকস প্রো- আখতারুজ্জামান শেখ রাহা, মোল্লাহাটের গিরিশ নগরে খান ব্রিকস প্রো-ইউসুফ আলী খান, চুনখোলা মানিক ব্রিকস প্রো-হাফিজ চৌধুরী এসব ভাটার নির্গত ধোয়ার কারণে ফসলি জমির ফলন অর্ধেকে নেমে এসেছে পরিবেশবান্ধব চিমনি ব্যবহার করা হচ্ছে না। তাছাড়া কয়লার সাথে টায়ারের কালি প্লাস্টিক ও কাঠের গুড়ি মিশিয়ে পোড়ানো হচ্ছে দেদারসে ভাটায় পুড়ানো বিষাক্ত কয়লার পানি যত্রতত্র  ফেলানো হচ্ছে যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
এছাড়া বিষাক্ত কয়লার পানি নদীতে পড়ে দূষিত হচ্ছে পানি যা ব্যবহারে আশেপাশের এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যগত মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ছে। এ সমস্ত অবৈধ ভাটার মালিকেরা দাপ্তরিক কাগজপত্র ছাড়াই সংশ্লিষ্ট দফতরের কিছু অসাধু কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে বছরের পর বছর তাদের নিজ নিজ ভাটায় ইট পুড়িয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে প্রশাসনকেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসাধু ভাটা মালিকেরা এহেনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বেশ দাপটের সাথে।
এ সমস্ত ইট ভাটা গুলো মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীর জায়গা দখল করে পাউবোর ভেড়িবাদের  রাস্তার মাটি কেটে ব্যবহার করছে তাদের ইট তৈরিতে এবং মোল্লাহাটের মধুমতি নদীর মাটিও কেটে ব্যবহার করছে তাদের ইটভাটায়। এ সকল কর্মকান্ড সহজেই আমাদের কাছে দৃশ্যমান হলেও অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর গুলো কেমন যেন মুখে কুলুপ এঁটে অসহায়ের মত বসে আছে। মনে হয় এ ব্যাপারে তাদের কোন কাজই নাই। অনেক ভাটায় শিশু শ্রমিকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এসব ভাটায় শিশুদের মাথায় করে মাটি, কাঠ, কাঁচা ইট, পুড়ানো ইট  বহন করা সহ কয়লায় আগুন দেওয়ার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজও করতে দেখা যায়। এসব কোমলমতি শিশুরা জীবনে বাঁচার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এক্ষেত্রে শ্রম অধিদপ্তরের ভূমিকা খুবই রহস্যজনক, হাস্যকর। তারা শুধু অফিসে বসেই এসব প্রতিষ্ঠানের খোঁজ খবর রাখেন। ভাটা স্থাপনের জন্য বায়ু দূষণ রোধে ভাটায় চিমনি ১২০ ফুট উঁচু করে নির্মাণের নির্দেশনা থাকলেও এই ইটভাটা মালিকরা তা মানছে না। তারা দায় সারা ভাবে ৪০, ৪৫ ,৫০, ৬০ ফুট উঁচু করে চিমনি নির্মাণ করেছে। এছাড়া চিমনি ভাটার ক্লিনের একপাশে স্থাপন সহ তার ভিতরের অংশে পানি রাখার ব্যবস্থা থাকার নিয়ম রয়েছে কিন্তু মালিকরা সে আইন ও অমান্য করছেন ।
পানির ব্যবস্থা রাখলে কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি কম হয় এবং পরিবেশবান্ধব সাদা ধোয়া বের হয়। আর এই ভাটা গুলো টাই চিমনি একপাশে স্থাপন না করে ভাটার মাঝখানে করেছেন।  এই  ইটভাটা গুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেখানে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলের জমি, সরকারি সড়ক, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর,কমিউনিটি ক্লিনিক, দাতব্য চিকিৎসালয়,  মসজিদ, মন্দির, হাট বাজার সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাছাড়া নদীর সরকারি সম্পত্তি দখল করেও ইটভাটা স্থাপন করেছে বলে অভিযোগ আছে। তাছাড়া পুরনো ইটের সুড়কি ফেলে নদী দখল করার কাজও তারা অব্যাহত রেখেছে।
সারাদেশে অবৈধ ইটভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালিত হলেও বাগেরহাটে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন ধরনের অভিযান পরিচালিত হয় নাই। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর বাগেরহাট জেলার উপ-পরিচালক মোঃ আসাদুর রহমান এর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন আমি ইতিমধ্যই এ সমস্ত ইটভাটা গুলোই চিঠি দিয়েছি না মানলে খুব শীঘ্রই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সমাজের সচেতন মহল মনে করেন কৃষি জমি রক্ষা পরিবেশ রক্ষা বায়ু দূষণরোদ সহ জনস্বাস্থ্য জীববৈচিত্র্য সুষ্ঠ সুন্দর রাখতে নিয়ম নীতির বাইরে চলা এসব অবৈধ ভাটা অচিরেই বন্ধপূর্বক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের কোন বিকল্প নাই।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *