

যশোর প্রতিনিধি
যশোর কেন্দ্রীয় কারগারে খাদ্য সরবরাহের ফ্যাসিবাদের দোসর আওয়মীপন্থী ঠিকাদারকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খাদ্য সরবরাহের সাত নম্বর প্যাকেজ তরকারি সরবরাহে হাফিজুর রহমান নামে আওয়ামীপন্থী ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, গেল ১২ ডিসেম্বর বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য সরবাহের দরপত্র দাখিল করা হয়। একই দিন দরপত্র খোলা হয়। সেখানে সাত নম্বর প্যাকেজে মোট ছয়জন দারাদাতা দরপত্র দাখিল করেন। কারাগার সূত্রে জানা যায়, ওই দরপত্রের প্রাক্কলিত মূল্য ছিল ১২ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে মেসার্স আসিফ পোল্ট্রি কমপ্লেক্সের দরপত্রে মূল্য ছিল ৬ লাখ ২৭ হাজার ৪২৪ টাকা। মৌ ট্রেডার্সের দরপত্র ৭ লাখ ৯২ হাজার ৮৮ টাকা, এস এম সফির ৭ লাখ ৯২ হাজার ১২৪ টাকা
মেসার্স হাফিজুর রহমানের ৮ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা, মেসার্স আসলাম এন্টারপ্রাইজের ৯ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ টাকা এবং মেসার্স শিকদার ট্রেডার্সের দরপত্রের মূল্য ছিল ১০ লাখ ৪ হাজার ৬৭৪ টাকা। নিয়মানুযায়ী দরপত্রের প্রাক্কলিত মূল্যের ৬৫ শতাংশের নিচে হওয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স আসিফ পোল্ট্রি কমপ্লেক্সের দরপত্রটি বাতিল হয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ কারা মহাপরিদর্শক থেকে দরপত্র বাতিল না করে পুনরায় মূল্যায়নের জন্যে বলা হয়। এরপর দ্বিতীয় দরদাতার দরপত্রে মূল্য তালিকায় অসঙ্গতি থাকায় সেটিও বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তৃতীয় দরদাতার দরপত্র প্রাক্কলিত
মূল্যের ৬৫ শতাংশ বেশি হওয়ার পরও সেটির জন্যে সুপরাশি না করে টেন্ডার কমিটি চতুর্থ নম্বর দরদাতার জন্যে সুপারিশ করে কারা মহাপরিদর্শককে প্রেরণ করে। তৃতীয় দরদাতার ১৪ টি তরকারির মূল্য প্রচলিত বাজার ব্যবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কারা কর্তৃপক্ষ সেটি মূল্যায়ন করেনি। সেখানে চতুর্থ দরদাতা মেসার্স হাফিজুর রহমানকে সাত নম্বর প্যাকেজে (তরকারি সরবরাহ) জন্যে নিয়োগ দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, চতুর্থ দরদাতার দাখিলকৃত দরপত্রে প্রতিটি তরকারি মূল্য তালিকা প্রচলিত বাজার ব্যবস্থার চেয়ে অনেক বেশি। আবার তৃতীয় দরদাতার চেয়ে চতুর্থ দরদাতার ব্যবধান
৬৮ হাজার ৩৭৬ টাকা। এরপরও কারা কর্তৃপক্ষ তাদের পছন্দের দরদাতা মেসার্স হাফিজুর রহমানকে নিয়োগের জন্যে সুপারিশ করে কারা মহাপরিদর্শকের নিকট প্রেরণ করে। সেখান থেকে হাফি জুর রহমানকে ওই কাজে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারাগারের একাধিক দরদাতা জানান, হাফিজুর রহমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। এ বিষয় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও দরপত্র কমিটির সদস্য সচিব শরিফুল আলমের প্রতিক্রিয়া জানতে তার দপ্তরে গেলে প্রথমে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনাকে সফি পাঠিয়েছে
হয়তো উনি কাজ না পাওয়ার ক্ষোভ আপনার সাথে প্রকাশ করেছে। দরপত্রে কোন অনিয়ম হয়নি। এই প্রতিবেদক ওই কাজে নিয়োগকৃত দরদাতার মূল্য তালিকা চাইলে তিনি বলেন, এটা দেওয়া যাবে না। তবে এই বিষয় কথা বলা যাবে। এখানে কোন স্বজনপ্রীতি হয়নি। দরপত্র মূল্যায়নের সময় পণ্যের মূল্য তালিকার বিষয়ে তৃতীয় দরদাতার জবাব চাওয়া হয়েছিল। উনি কোন সন্তোসজনক জবাব দেননি। তবে তৃতীয় দরদাতা এস এম সফি বলেন, দরপত্র মূল্যায়নের সময় তার কোন জবাব নেওয়া হয়নি। এই প্রতিবেদক একাধিকার কারা উপমহাপরিদর্শক ও দরপত্র কমিটির চেয়ারম্যান অসীম কান্ত পালের দপ্তরে যান। তিনি দাপ্তরিক কাজে বাইরে ছিলেন। তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ফিরতি কলও দেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।