এপ্রিল ২৭, ২০২৫
Home » ভাঙ্গায় বলাৎকারের অভিযোগের আসামিকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেল কতিপয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি
টটটট

রুবেল খান,ভাঙ্গা ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার হোসেন নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বলাৎকারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাবেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধির ভাগনেসহ একটি চক্র অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিজেদের জিম্মায় নিয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার রাতে উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মালীগ্রামের নুরুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন ওই মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগের শিক্ষক। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারীর চিতারবাজার গ্রামের বাসিন্দা।

অভিযোগ উঠেছে, ওই শিক্ষককে বাঁচাতে ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে সাবেক স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার ভাগনে সালাউদ্দিন খাঁন ও তার সহযোগী পাঁচকুল গ্রামের বাসিন্দা আসমত খাঁন, সাহাদাৎ মাতুব্বর ও গোয়ালবেড়া গ্রামের জামাল মোল্লা মাদ্রাসায় আসেন। সেখানে মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দফারফা করে অভিযুক্ত শিক্ষককে তাদের জিম্মায় নেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা নজরুল ইসলাম খান সমকালকে বলেন, গতকাল বিকেলে হিফজ বিভাগের ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে একটি কক্ষে আটকে বলাৎকার করেন আনোয়ার হোসেন। একপর্যায়ে শিশুটির চিৎকার শুনে অন্যরা দৌড়ে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করা হয়। বিষয়টি মীমাংসা করে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি ও সালাউদ্দিন খাঁন নামের এক ব্যক্তি ওই রাতেই শিক্ষককে তাদের জিম্মায় নিয়ে যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্তের মুখে আলকাতরা মেখে চুল কেটে দিয়েছে স্থানীয়রা। ঘটনাটি ধামাচাপার দেওয়ার চেষ্টা করেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাগনে সালাউদ্দিন খাঁন ও তার একটি প্রভাবশালী চক্র। অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশের কাছে সোপর্দ না করে প্রায় ১ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে মাদ্রাসা থেকে পালাতে সহযোগিতা করেন তারা। এতে মাদ্রাসা পরিচালক নজরুল ইসলাম ও মামুন রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

মাদ্রাসার পাশের কয়েকজন দোকানি জানান, ঘটনার পর মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে পুলিশের কাছে সোপর্দ না করে বরং তাকে সেখান থেকে গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বলেন, ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিশুরা। তাই ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকসহ বিষয়টি ধামাচাপায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত বিচারের দাবি জানাই এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে কলে পাওয়া যায়নি চান্দ্রার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কোনো দফারফার বিষয়ে অবগত নন তিনি। এ বিষয়ে তার ভাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

অন্যদিকে চেয়ারম্যানের ভাগনে সালাউদ্দিন খাঁন বলেন, গতকাল রাতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা মাদ্রাসায় গিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি করলে সেখানে যাই। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভিকটিমের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই রাতেই মাদ্রাসার পরিচালকদের নিয়ে ঘটনাটি মীমাংসা করি। তবে, এতে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদুর রহমান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী ও তার পরিবার থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *