জুন ১৬, ২০২৫
Home » মাছ ধরার নতুন ভয়ংকর ফাঁদ চায়না স্পটলাইট
টটটট

নাসির আহ‌মেদ, স্টাফ রিপোর্টার 

 বাঞ্ছারামপুরে স্পটলাইট ফিশিং নামে নতুন এক ভয়ংকর পদ্ধতি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। চায়নার তৈরি স্পটলাইট দিয়ে ছোট পোনা থেকে বড় মাছ—সব ধরা পড়ছে। শক্তিশালী আলো এবং বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ব্যবহার করে মাছকে সংজ্ঞাহীন বা অচেতন করে সহজেই শিকার করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে জলজ প্রাণীর স্বাভাবিক জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে, মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং মাছের উৎপাদন কমছে। বাঞ্ছারামপুরের চরশিবপুর, পাঠামারা, নিলখীসহ বিভিন্ন গ্রামে অবৈধভাবে এই পদ্ধতিতে মাছ ধরা হচ্ছে। স্থানীয় জেলেরা জানান, একেকটি স্পটলাইট মেশিনের দাম ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। এসব মেশিন ঢাকা থেকে আনা হচ্ছে।
এক মাছ শিকা‌রি জানান, এ স্পটলাইট ১০ ফুটের মধ্যে মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া, এমনকি অন্যান্য জলজ প্রাণীও আটকা পড়ে। ফলে মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, ১০-১৫ বছর আগেও চাঁই, পলো, বরশির মতো দেশীয় উপায়ে মাছ ধরা হতো, যা পরিবেশবান্ধব ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্পটলাইট ও কারেন্ট জালের কারণে দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদা ইসলাম বলেন, “স্পটলাইট ইলেকট্রনিক ফিশিং জাল সম্পর্কে শুনেছি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, “অবৈধ জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে চায়না স্পটলাইট ও কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ফেলা হবে এবং স্পটলাইট দি‌য়ে যারা মাছ শিকার কর‌ছে এদের বি‌রু‌দ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে এ ধরনের মাছ শিকার জলজ বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট করবে। তাই প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, জনসচেতনতা ও কঠোর আইন প্রয়োগ জরুরি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি চায়নার তৈরি স্পটলাইট ব্যবহার করা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, “২/৩ বছরের মধ্যে এলাকায় মাছ দূরে থাক, পোনামাছও মিলবে না।” সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে, মাছ শিকারিরা ছবি তুলতে দেন না, যা তাদের অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সন্দেহ সৃষ্টি করে। এ পরিস্থিতিতে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বাঞ্ছারামপুরের জলজ বাস্তুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এবং দেশীয় মাছের অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে। এইভাবে সজাগ এবং কার্যকর প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে বাঞ্ছারামপুরের জলজ পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *