মার্চ ১৫, ২০২৫
Home » তিতাস গ্যাসে ঘুষ কেলেঙ্কারি: চারজন প্রত্যাহার, দুজন এখনো বহাল তবিয়তে
image - 2025-02-18T173233.765

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (টিজিটিডিসিএল) অফিসে ঘুষের টাকা ভাগাভাগির একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ। ভিডিওতে ধরা পড়া চারজনকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হলেও, অভিযুক্ত আরও দুইজন—মোঃ সামসুদ্দিন মিয়া (সাহায্যকারী) ও মোঃ ইসমাইল (প্রকর্মী)—এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন, যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। একটি গোপন ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সহকারী কর্মকর্তা এস.এম হারুন আল রশিদ এবং তিন কর্মচারী—পিসি অপারেটর হাসান ইমাম, সিনিয়র গাড়ি চালক সোলায়মান ও হারুনুর রশিদ অফিসে বসে ঘুষের টাকা ভাগাভাগি করছেন। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে স্ট্যান্ড রিলিজ (বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত) করার সিদ্ধান্ত নেয়।

অভিযুক্ত দুইজন এখনো বহাল, প্রশ্নের মুখে তদন্ত ,যদিও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তবে মোঃ সামসুদ্দিন মিয়া ও মোঃ ইসমাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট মহলে বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করা হলে, তারা জানান যে তদন্ত এখনো চলমান। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতির বিস্তৃতি: প্রতিদিন লাখ টাকার ঘুষ আদায় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে তিতাস গ্যাসের গাড়ি ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় অভিযানের নামে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করত। তারা অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো। এছাড়া, এই দুর্নীতিবাজ কর্মচারীরা ‘লুঙ্গি পার্টি’ নামে একটি চক্রের নেতৃত্ব দিতো, যা অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা তুলত। এই লুঙ্গি পার্টির প্রধান ছিলেন শামীম ও তার সহযোগী নাসির, যারা অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছত্রছায়ায় অবৈধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন।

দুদক ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ ,দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জ্বালানি মন্ত্রণালয়, পেট্রোবাংলা এবং তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরি চালকের কাছে দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টার একান্ত সচিব হাসনাত মুর্শিদ জানান, “বিষয়টি উপদেষ্টা মহোদয়ের নজরে আনা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রকৌ.মো. মশিউর রহমান এর সাথে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি জানান অ্যাডমিন ব্যবস্থা নিবে আমি আমার উপরস্থ কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছি। তবে তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ নেওয়াজ পারভেজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিতাস গ্যাসের ভাবমূর্তি সংকটে, কঠোর পদক্ষেপের দাব এই ঘটনা তিতাস গ্যাসের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। সাধারণ গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট মহল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য কঠোর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষ কত দ্রুত ও কার্যকরভাবে এই দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে পারে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *