
এফ,এম,এ রাজ্জাক, পাইকগাছা (খুলনা)
বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য প্রয়োজন। আবার ভেজাল, মানহীন ও অনিরাপদ খাদ্য মৃত্যুরও কারণ হতে পারে। অথচ বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত গবেষণা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, পাইকগাছা বাজারে প্রাপ্ত খাদ্যপণ্যের একটি বড় অংশই ভেজাল, মানহীন ও অনিরাপদ। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যের ২৬ শতাংশই মানহীন। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) পরীক্ষাগারে সম্পাদিত পরীক্ষার ফলাফলে এই তথ্য জানা গেছে।
খাদ্য ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিরাপদ খাবার গ্রহণের কারণে মানুষ ক্যান্সার, লিভার ও কিডনির নানা ধরনের রোগসহ দুই শতাধিক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি ১০ জনে একজন অনিরাপদ খাদ্যের কারণে অসুস্থ হয় এবং বছরে প্রায় চার লাখ ২০ হাজার মানুষ মারা যায়।
এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি দেশে পালিত হয়েছে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস ২০২৫। বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, খাদ্য উৎপাদনের সব পর্যায়ে তদারকি এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায় দেশে প্রতিবছর যত মানুষ মারা যায় তার ১২ শতাংশই মারা যায় নানা ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। আর এসব ক্যান্সারের শীর্ষে রয়েছে ফুসফুস, শ্বাসনালি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার। পাইকগাছা হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার মাহবুবর রহমান জানান, দেশে বেশির ভাগ খাদ্যপণ্যেই স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। বিএফএসএর পরীক্ষায় যেসব মানহীন পণ্য পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে। পাউরুটি, ধনিয়ার গুঁড়া, লবণ, কোমল পানীয়, সরিষার তেল,. মুড়ি, আচার, ঘি, সস, মধু, ফ্লেভারড ড্রিংকস, কুল লাচ্ছি, এডিবল জেল।
বাজার থেকে সংগ্রহ করা মুড়ির সাতটি নমুনার প্রতিটিতেই মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড ও ইউরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সময়ে দেখা গেছে, খাদ্যপণ্যের উৎপাদন, সরবরাহ ও বিপণনের কোনো পর্যায়েই সঠিক মান রক্ষা করা হয় না। হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং অনেক কারখানায় অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি করা হয়। ফলে নানা ধরনের জীবাণু সংক্রমিত হয়ে এসব খাদ্যপণ্য জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। আমরা আশা করি, তারা নাগরিকদের নিরাপদ খাদ্য পাওয়ার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে। পাশাপাশি এসংক্রান্ত আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নইলে জনস্বাস্থ্য ঘটবে মারাত্মক বিপর্যয়।