

শেখ শহিদুল ইসলাম মিঠু,ব্যূরো প্রধান খুলনা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে সাবেক ভিসি এবং দৌলতপুর থানার সাবেক ওসি সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে, রোববার মহানগর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক মোঃ রকিবুল ইসলাম অভিযোগটি গ্রহণ করে মামলা হিসেবে রেকর্ড করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য খান জাহান আলী থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন, দুই মামলার আসামিরা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আলমগীর হোসেন, এছাড়া তৎকালীন প্রফেসর মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ডক্টর
সোবহান মিয়া, সাবেক রেজিস্টার জিএম শহিদুল ইসলাম মেকানিকাল, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাফায়েত হোসেন নয়ন, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও
সাবেক সেক্রেটারি আলী ইমতিয়াজ সোহান, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও লালন শাহ হলে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী এরশাদ রহমান, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ও লালন শাহ হলের সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী তরিকুল তিলক, পরিমল কুমার, আলী ইবনুল সনি, তারিক আহমেদ শ্রাবণ, দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন, আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাঁধীরা হলেন
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ ও বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্র, তারা নিয়মিত নামাজ কালাম পড়তেন, বাদী মাহদী হাসান তার এজাহারে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু হলে থাকতেন তিনি, ২০১৭ সালে ১ মে রাত পৌনে ১২টার দিকে ১৫ তম ব্যাচের ছাত্র তাশরিপ সালেহ (রাহুল) ও মাশরুম আলম কৌশিক সহ আরো ও পাঁচজন দরজার কড়া নাড়তে থাকে, ঘুম থেকে দরজা খুলে দিলে তারা ডেকে নিয়ে হলের
গেট রুমে ডেকে নেয় তাকে, সেখানে গিয়ে আরো ও দুজন নাঈম ও রুমানকে ধরে আনা হয়, নাঈম ও রুমানের সাথে তিনি দৌলতপুর একটি কোচিং সেন্টারে একসাথে পড়াশোনা করত, পরে জানতে পারেন ওই কোচিং সেন্টারের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার নাম দৌলতপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন শিবির সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার জিএম শহিদুলের কাছে জমা দিয়েছে, তখন রেজিস্টার জিএম শহিদুল ইসলাম, সাবেক বিসি ডক্টর মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ও ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক ডক্টর সুবাহান মিয়া পরামর্শ করে মেহেদী হাসান সহ তালিকায় ছাত্রদের নির্যাতন করার জন্য
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত হোসেন নয়ন এবং আলী ইমতিয়াজ সোবাহানকে তালিকা প্রদান এবং নির্দেশ প্রদান করেন, মামলায় আরো বলা হয়, গেট রুমে মহাদিকে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নাঈমকে কিভাবে চিনি বলে, এর পরপরই শুরু হয় নির্যাতন, আসামি সাদমান নাহিয়ান সেজান কিল এবং ঘুসি মারতে থাকে, পরবর্তীতে লাঠি, স্ট্যাম্প এবং রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকে তাদের আঘাতে বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৃত ভেবে আসামিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে, পরবর্তীতে সাবেক ভিসি ও সাবেক রেজিস্টারের নির্দেশে খানজাহান আলী থানার পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায় এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা নাশকতা মামলা দায়ের করে, অপর মামলার বাদী লুৎফর রহমান, লালন শাহ হলের ছাত্র ছিলেন, এজাহারে উল্লেখ করেন, সাব্বির নামে একজন
রুমমেট ছিল তার, তিনি রাজনৈতিক মামলায় দৌলতপুর একটি কোচিং সেন্টার থেকে গ্রেপ্তার হন, পরে তিনি জানতে পারেন ওই কোচিংয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার নাম থানার ওসি কুয়েট রেজিস্টারের নিকট জমা দিয়েছেন, ওসির দেওয়া তালিকার ছাত্রদের নির্যাতন করার জন্য সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি শাফায়েত হোসেন নয়নকে তালিকা সরবরাহ এবং নির্দেশ প্রদান করেন, মামলায় আরো বলা হয়-২০১৭ সালের ১ মেয়ে রাত,১০, টার দিকে তাকে কুয়েত লালন শাহ হলে ডেকে নেওয়া হয়, আসামি শাফায়েত হোসেন নয়ন বাঁদিকে বলে তুমি শিবির কর অস্বীকার করার সাথে সাথে অপর আসামি আলী ইমতিয়াজ সোহান তার গালে চড় ঘুষি এবং কিল মারতে থাকে, নির্যাতন রাত ৪ টা পর্যন্ত চলতে থাকে, জানতে চাইলে বাদী পক্ষের আইনজীবী মোঃ শফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, কুয়েটের
হলের গেট রুম গুলো ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হত ছাত্রলীগের মতের বিরুদ্ধে গেলে তাদের উপর নির্যাতন নেমে আসতো, তিনি আরো বলেন, বাদী মহাদি ও লুৎফুর নিয়মিত নামাজ কালাম আদায় করত, ছাত্রলীগ সদস্যদের মতের বিরুদ্ধে যাওয়াই ছাত্রশিবির আখ্যায়িত করে সেদিন তাদের অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছিল, পুলিশ তাদের পক্ষে নিয়ে কাজ করেছে তাদের আঘাতে বাদী লুৎফর রহমানের একটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে, শরিফুল ইসলাম লিটন বলেন, রোববার তারা দুজন আদালতে অভিযোগ করেছেন, আদালত তাদের অভিযোগটি গ্রহণ করে মামলা রেকর্ড করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য খান জাহান আলী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন