

বিশেষ প্রতিবেদক
শিল্প শহর নওয়াপাড়ায় এক সংখ্যা লঘু হিন্দুর জমি ও বাড়ি দখল করে নিয়েছে সেখানকার চিন্নিত বিএনপি নেতা ও তার পরিবারের সদস্যরা। এই অভিযোগের পক্ষে ভুক্তভুগি পরিবারটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিমল কান্তির ছেলে পিয়াস কর্মকার পিতা পরিমল কান্তি কর্মকার ও মা বিউটি কর্মকার। পিতা পরিমল কান্তি কর্মকার দীর্ঘ ৩৬ বছর যাবত যশোর জেলার অভয়নগর থানার নোয়াপাড়া পৌরসভা ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। প্রফেসর পাড়া মহিলা কলেজ রোডের ১২৮০ নাম্বার হোল্ডিং নিজ বাসায় সুনামের সাথে বসবাস করে আসছিলেন। বিএনপি নেতা এফএম আলাউদ্দিন পরিমলের নিকটতম প্রতিবেশী। উনি ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতা প্রযোগ করে পরিমলের পরিবারের উপর নানাভাবে শারীরিক লাঞ্ছনা, হেয় প্রতিপন্ন করা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি করছেন। উনাদের অত্যাচারে আমাদের সেখানে বসবাস করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল।
সর্বশেষ ২০১৬ সালে এফ এম আলাউদ্দিনের ছোট ছেলে এফ এম রাব্বি ও তার গুন্ডাবাহিনী পরিমলের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছিল। উল্লেখ থাকে যে এফ এম আলাউদ্দিনের দুই ছেলে এফ এম রাজু আহমেদ ও এফএম রাব্বি এলাকায় ক্যাডার ভিত্তিক সন্ত্রাস ও ত্রাস কায়েম করেছে। তারা বর্তমানে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদল নেতা ও মূর্তিমান আতঙ্ক। এই হামলার পরিপেক্ষিতে পরিমলের স্ত্রী বিউটি কর্মকার বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করতে বাধ্য হন, যে মামলাটি এখনো চলমান আছে। এরপর থেকে মামলা করায় আলাউদ্দিন পরিবার ক্রোধান্বিত হযে পরিমলের পরিবারের উপর নানাবিধ হুমকি ধামকি- এমনকি প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন। তাদের এরূপ অত্যাচার ও হুমকিতে পরিমলের পরিবার ছয় নাম্বার ওয়ার্ডের বাড়িটি ভাড়া দিয়ে যশোর শহরে বসবাস করতে বাধ্য হন। এবং ২০১৭ সাল থেকে যশোর শহরে বসবাস করছেন। তারপর থেকে নোয়াপাড়ার ছয় নম্বর ওয়ার্ডের বাড়িটি ভাড়া দেওয়া ছিল।
সর্বশেষ ২০২৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমার পিতা পরিমল কান্তি জানতে পারেন যে এফ এম আলাউদ্দিনের দুই ছেলে, তার পিতা বিএনপি নেতা এফ এম আলাউদ্দিনে ও তার চাচা এফএম গিয়াস উদ্দিন (বর্তমান বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক) এর ক্ষমতা প্রয়োগ করে বসতবাড়িটি দখল করে সেখানে তালা লাগিযে রেখেছে। খবর পেয়ে নোয়াপাড়ায় গেলে দেখেন যে বাড়িতে তালা দেওয়া আছে। পরিমল বাড়িতে প্রবেশ করার সাথে সাথে আলাউদ্দিনের দুই ছেলে এফএম রাজু আহমেদ ও এফ এম রাব্বি ও তাদের গুন্ডাবাহিনী বাসায় প্রবেশ করে পরিমল কান্তি কর্মকার (৬৫) এর উপর হামলা করে। এসময় তারা তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করে। এরপর তাকে টেনে হিচড়ে তাদের বাসার একটি কক্ষে আটকে রাখে ও দফায় দফায় পিটিয়ে পাশবিক নির্যাতনে হত্যা চেষ্টা করে। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে পরিমল পিতা বুদ্ধিমত্তা ও সুযোগ পেয়ে তাদের নিচতলার ওই ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তায় চলে আসেন। তখন আলাউদ্দিন তাকে প্রফেসর পাড়া মোড়ে একটি ওষুধের দোকানে বসিয়ে তাকে হুমকি দেন সরকারি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না নেওয়ার জন্য ও খানায় গিয়ে মামলা না করার জন্য। পরবর্তীতে তাকে ট্রেনে তুলে দিয়ে সরাসরি যশোরে গিয়ে বাসায় চলে যেতে বলেন।
পরবর্তীতে অত্যন্ত আহত হয়ে পরিমল বাসায় আসার পর বারবার বমি করতে থাকেন ও ট্রমাটাইজড হয়ে যান। পরবর্তীতে তাকে চিকিৎসার জন্য যশোর সরকারি ২৫০ বিশিষ্ট হসপিটালে ভর্তি করা হয় সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। এখনো পর্যন্ত বসতবাড়িটি আলাউদ্দিন গঙ ভালাবদ্ধ করে রেখেছে। ঐ পরিবার কোন আইনি সহায়তা পাচ্ছেনা। এমনকি তাদের জীবনে নিরাপত্তা নেই। বিষয়টির আশু সমাধান ও ন্যায় বিচার দাবি করেছেন পরিমল, তার ছেলে ও স্ত্রী। প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আকুল আবেদন জানান পরিমল। তার পরিবারের সাথে ঘটা এই নিদারুন নির্যাতনের ঘটনার বিচার, এবং বাড়িটি ফেরত পেতে তারা সাংবাদিকদের সহযোগিতা দাবি করেন।