
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার ওয়াপদা রোডস্থ বনবিথী এলাকায় বেক্সিমকো ওষুধ কোম্পানির ডিপোতে সংঘটিত এক চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে শহরের বনবিথি এলাকায় সৈয়দ বদরুজ্জামানের মালিকানাধীন সুগন্ধ্যা ভিলায় বেক্সিমকো ওষুধ কোম্পানির ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৩ জন কর্মচারীকে জিম্মি করে ৬৬ লক্ষ টাকা ও স্বর্ণ লুট করে নিয়ে যায়।
বেক্সিমকো কোম্পানির ডেপুটি ইনচার্জ রেজা মিয়া জানান, “রাতে ডিপোর সেটে আমাদের ৭ জন কর্মচারী কাজ করছিল। হঠাৎ রাত অনুমানিক ৩টার দিকে ৩ জন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাইরে থাকা দারোয়ানসহ ১৩ জনকে জিম্মি করে ফেলে। পরে ডিপোর গেটের তালা ভেঙে তৃতীয় তলায় আমার ঘরের দরজা ভেঙ্গে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর ডাকাতরা দ্বিতীয় তলায় অফিসের লোহার লকার ড্রিল মেশিন দিয়ে ভেঙে নগদ ৬৬ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, “ডাকাতরা আমার রুম থেকে দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১২ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। তারা চলে যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই সুগন্ধ্যা ভিলায় বেক্সিমকোর ডিপো অবস্থিত। কোম্পানির নিজস্ব ৪ জন নিরাপত্তা প্রহরী রয়েছে। সরজমিনে দেখা গেছে, উক্ত ভবনের দুটি প্রবেশপথ রয়েছে—একটি দক্ষিণে ওয়াপদা সড়কের সম্মুখে, যা মূল গেইট হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যটি পশ্চিম দিকে চুবড়া রাস্তার সাথে সংযুক্ত।
ডিপোর এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “আমরা প্রতিদিন রাতে প্যাকেজিংয়ের কাজ করি। প্রায় ১-২ বছর ধরে এখানে প্রায়ই চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে, কিন্তু আমরা এখনো কাউকে ধরতে পারিনি। একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “ঘটনাটি সকালে জানতে পারলাম, কিন্তু রাতে কোনো শব্দ বা চিৎকার শুনতে পাইনি। প্রায়ই এখানে চোর চোর বলে চিৎকার শুনি, কিন্তু কাউকে ধরতে পারি না। মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এ কে এম জাহাঙ্গীর হুসেন বলেন, তিনজন ডাকাত এতগুলো মানুষকে জিম্মি করে এত বড় একটি ঘটনা ঘটিয়েছে—এটি আমাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।