মে ১২, ২০২৫
Home » বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠনে যুব সমাজের ভূমিকা
বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠনে যুবসমাজের ভূমিকা

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

বর্তমান বিশ্বে সামাজিক বৈষম্য ও হিংসার ছায়া অনেকাংশে বিদ্যমান। একটি শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠনের জন্য যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ যুবকরাই একটি জাতির মূল চালিকা শক্তি এবং ভবিষ্যতের নির্মাতা। তাদের হাতেই নির্ভর করে একটি জাতির উন্নতি বা অবনতি।

বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনে যুব সমাজের ভূমিকা:
যুব সমাজই পারে সামাজিক বিভাজন দূর করে ঐক্যের বন্ধন তৈরি করতে। সমাজে বিদ্যমান দারিদ্র্য, বর্ণবাদ, লিঙ্গ বৈষম্য ও অন্যান্য সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তারা ন্যায়পরায়ণতার পক্ষে কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের করণীয় হতে পারে:

শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধি: সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও বৈষম্য দূর করতে যুবকদের শিক্ষিত হতে হবে এবং অন্যদেরও শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত করতে হবে।

স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ: দারিদ্র্য দূরীকরণ, সুবিধাবঞ্চিতদের সহায়তা, এবং সমাজসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।

নৈতিক নেতৃত্ব প্রদান: যুবকরাই আগামী দিনের নেতা। তাদের মধ্যে নৈতিকতা, সততা ও উদার মনোভাব থাকতে হবে যাতে তারা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

সামাজিক মিডিয়ার সদ্ব্যবহার: বর্তমান যুগ প্রযুক্তিনির্ভর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যুবসমাজ অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে পারে এবং ন্যায়পরায়ণতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে।

হিংসামুক্ত সমাজ গঠনে যুবসমাজের করণীয়:
হিংসা সমাজের অগ্রগতির অন্যতম প্রধান বাধা। এটি শুধু ব্যক্তির ক্ষতি করে না, বরং পুরো সমাজকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। যুবসমাজ যদি হিংসা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকে এবং অন্যদেরও সচেতন করে, তবে একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। এজন্য:

সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তোলা: অন্যের মতামত ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা জানানো এবং ভিন্নমতকে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।

সংঘাত নিরসনে ভূমিকা রাখা: সমাজে যে কোনো ধরনের দ্বন্দ্ব বা সংঘর্ষ দেখা দিলে তা নিরসনের জন্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

মাদক ও অপরাধ থেকে দূরে থাকা: যুবকদের মাদকাসক্তি ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং অন্যদেরও এ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

সমাজের দুর্বলদের পাশে দাঁড়ানো: শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও অন্যান্য সুবিধা বঞ্চিতদের সহায়তা করে একটি ন্যায়সঙ্গত ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

একটি বৈষম্যমুক্ত ও হিংসামুক্ত সমাজ গঠনে যুবসমাজের ভূমিকা অপরিসীম। তাদের শক্তি, উদ্যম এবং সদিচ্ছা থাকলেই সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাই আমাদের যুবসমাজকে শিক্ষিত, নৈতিক ও সমাজ সচেতন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা আগামীর সুন্দর সমাজের রূপকার হতে পারে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *