

মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার
দীর্ঘ চার মাস যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার কিছু পরে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন দুই পুত্রবধূ — জোবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান। এর মধ্যে জোবাইদা রহমান প্রায় ১৭ বছর পর বাংলাদেশে ফিরলেন, যা দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে সৃষ্টি করেছে বাড়তি উচ্ছ্বাস ও আবেগ।
বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হলে বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা জুড়ে শুরু হয় স্বাগত জানানো নেতাকর্মীদের ঢল। নানা স্লোগান, ব্যানার ও পতাকায় মুখরিত হয় পুরো এলাকা। তার গাড়িবহর রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অতিক্রম করার সময় নেতাকর্মীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস এবং ভালোবাসার প্রকাশে গোটা পরিবেশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত জনসমাগমের কারণে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ধীরগতিতে গন্তব্যের দিকে এগোয়।
এই আবেগঘন মুহূর্তে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান। তিনি লেখেন,
“আমরা বিশ্বাস করতে চাই, জুলাই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের আপামর ছাত্র জনতা যে আকাঙ্ক্ষাগুলোকে বুকে ধারণ করে অকাতরে রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে; সেই আকাঙ্ক্ষাগুলোকে সামনে রেখে তিনি এবং তার দল বিএনপি আপোসহীনভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের স্বার্থকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাবেন।”
তিনি আরও লেখেন, “তার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।”
সারজিস আলমের এই বক্তব্য ইতোমধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিএনপির একাধিক নেতা তাঁর বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা রক্ষায় সকল দেশপ্রেমিক নাগরিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের একত্রিত হওয়া এখন সময়ের দাবি।
বেগম খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন এবং জোবাইদা রহমানের দীর্ঘদিন পর দেশে ফেরা বিএনপির রাজনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বিশেষ করে আগামী নির্বাচন ও রাজপথে রাজনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই প্রত্যাবর্তন এক নতুন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
বেগম জিয়ার দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করছে। নেতাকর্মীদের মতে, এই প্রত্যাবর্তন শুধু একজন নেত্রীর ফেরাই নয়, এটি দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতির প্রতীক।