মে ১২, ২০২৫
Home » চার মাস পর দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া, দুই পুত্রবধূসহ ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ অবতরণ
image (1)

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার

চার মাস দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে প্রেরিত একটি বিশেষ ‘এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে’ করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। তার সফরসঙ্গী ছিলেন দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, চিকিৎসক, মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যসহ মোট ১৩ জন।

দীর্ঘ চার মাস পর খালেদা জিয়ার দেশে প্রত্যাবর্তন ঘিরে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে সকাল থেকেই গুলশানস্থ চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে জড়ো হতে থাকেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, বিএনপির দলীয় পতাকা এবং জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি।

বিমানবন্দরে অবতরণের পর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর যখন গুলশানের দিকে রওনা হয়, তখন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী দলনেত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য ভিড় করেন। তবে দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের পেছনে মোটরসাইকেল বা পায়ে হেঁটে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এসব নির্দেশনা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসভবনের সামনে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। র‍্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা বলয়ে ছিলেন। একইসাথে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দল দায়িত্ব পালন করেন ভিআইপি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলে পুরো এলাকা—“মা ফিরেছে, মুক্তির পথ প্রস্তুত হচ্ছে”, “খালেদা জিয়া আমাদের আশা” ইত্যাদি ধ্বনিতে।

উল্লেখ্য, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ৮ জানুয়ারি সকালে তিনি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান, সেখানে তাকে স্বাগত জানান তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকে সরাসরি ভর্তি হন লন্ডনের বিখ্যাত ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’-এ। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে ১৭ দিন কাটানোর পর তিনি তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। পরবর্তী তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানেই তার চিকিৎসা ও বিশ্রাম চলে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “চিকিৎসা ও দীর্ঘ বিশ্রামের ফলে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে তিনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন, তাকে নিয়মিত চিকিৎসার আওতায় রাখতে হবে।”

দলের শীর্ষ নেতারা জানান, খালেদা জিয়ার এই প্রত্যাবর্তন শুধু তার পরিবারের জন্যই নয়, গোটা দলের জন্য এক আবেগঘন ও তাৎপর্যপূর্ণ মুহূর্ত। বহুদিন ধরে দলের কর্মী-সমর্থকদের হৃদয়ে এই প্রত্যাবর্তনের জন্য যে অপেক্ষা জমে ছিল, আজ তা পূরণ হলো।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *