

মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার:-
বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা শুধু বিএনপি নয়, বরং গোটা দেশ ও জাতির জন্য একটি আনন্দের খবর। এটা গণতন্ত্রের পথে এক বড় অগ্রগতি। তার প্রত্যাবর্তন দেশে বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্রকে বাঁচাতে, মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে এবং একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়া সেই আন্দোলনের প্রেরণা। আজ তার ফেরার মাধ্যমে আমাদের সংগ্রামে নতুন গতি আসবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সময়ে আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া করেন। তিনি যেন আবারও জনগণের মাঝে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন, সেটাই আমাদের কামনা।”
বিএনপি নেতাদের দাবি, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে খালেদা জিয়ার সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দেশের জন্য এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দলের সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, এই প্রত্যাবর্তন একদিকে যেমন বিএনপির অভ্যন্তরীণ ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে, অন্যদিকে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
বেগম জিয়ার দীর্ঘ চিকিৎসা লন্ডনে সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে হার্ট, লিভার ও কিডনির জটিলতা নিয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। চিকিৎসক দলের মত অনুযায়ী এখন তিনি ধীরে ধীরে দেশের মাটিতে আরও উন্নত পর্যায়ের রিহ্যাব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবেন।
বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, তাদের নেত্রীর অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো হলেও তাকে নিয়ে এখনও উদ্বেগ কাটেনি। তার চিকিৎসা চলমান থাকবে এবং প্রয়োজনীয় হলে বিদেশে পুনরায় যাওয়া হতে পারে।
বিমানবন্দরে বেগম জিয়াকে স্বাগত জানাতে আসা বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দলের কর্মীরা বলেন, “আমাদের নেত্রী অনেক দিন পর দেশে ফিরেছেন, আমরা তাকে কাছে পেয়ে গর্বিত। তিনি আমাদের আশার আলো। দেশে যখন গণতন্ত্র বিপন্ন, তখন তার মতো একজন নেত্রীর উপস্থিতি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, বেগম জিয়ার দেশে ফেরা একদিকে যেমন রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে, তেমনি বিরোধী দলের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের ছকেও বড় পরিবর্তন আনতে পারে। রাজনৈতিক পালাবদলের এই সময়ে তার উপস্থিতি সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। বর্তমানে বিএনপির পক্ষ থেকে নেত্রীর জন্য নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা, নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। অচিরেই তাকে নিয়ে বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বলেও আভাস দিয়েছেন একাধিক সিনিয়র নেতা।