

বিএম সাব্বির হাসান,
মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধি
ভ্যাকসিন নাই, স্টোর শূণ্য মহিলাদের জন্মনিয়ন্ত্রন পিল,আবার এ্যাম্বুলেন্স সেবায় বাড়তি ভাড়া নেওয়া, হাসপাতালের বাইরে থেকে রোগী নিয়ে সাতক্ষীরা,খুলনা এলাকায় চলে যাওয়াতে ইমার্জেন্সী সেবা ব্যাহত হওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
সেবা নিতে আসা রোগীরা জানাচ্ছে ক্ষোভ অপরদিকে দায়সারা বক্তব্য দিয়ে সমস্যায় জর্জরিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাম মাত্র সেবাতে দিনের পর দিন মণিরামপুর উপজেলা বাসী স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পতিত হচ্ছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা যশোরের মণিরামপুরের সর্বত্র এলাকাজুড়ে এখন বেওয়ারিশ কুকুর আতংক বিরাজ করছে। ১টি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া মহল্লাবাসী বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট, বাজার, অফিস চত্বর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,এমনকি বাড়ির আঙ্গিনাতে কোমলমতী শিশু সহ সব বয়সীরায় কুকুরের কামড় ও হামলা থেকে অনিরাপদ।এমন অবস্থায় দীর্ঘ ৮ মাস যাবত Rabix ভ্যাকসিন সেবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না থাকায় আরো বেশি ভাবিয়ে তুলছে জন সাধারনকে।
বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে জখম হয়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসলেউ হতাশা নিয়ে রোগীরা ফিরে জানাচ্ছে ক্ষোভ। সম্পূর্ণ উদাসীনতা দেখিয়ে দায়সারা সব জবাব দিয়ে চলেছে কর্তৃপক্ষ। কুকুরের অত্যাচার ও মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বক্তব্যের বিপরীতে কুকুরের কামড়ের রোগীরা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন সুধীসমাজ। তথ্য মোতাবেক, গেলো কয়েকদিনে ৫০ জনেরও বেশি বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন কুকুর, বিড়ালে কামড়ানো মানুষ হাসপাতালে আসছে। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কুকুরে কামড়ানোর চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। ভুক্তভোগীদের বাজার থেকে অধিকমূল্যে ভ্যাকসিন কিনতে হচ্ছে। উপজেলার দহাকুলা গ্রামের জিসান (৬) পাড়িয়ালী গ্রামের হামিদা বেগম (৪১) বাজিতপুর গ্রামের পূর্ণিমা (৬৫), খানপুর গ্রামের মাসুম (২৪) ৩ই মে চিকিৎসা নিতে এসে এমন পরিস্থিতির শিকার হন।পৌর শহরের তাহেরপুর গ্রামের জিল্লুর মেয়েকে বানরে কামড়ালে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও একই ভাবে ফিরিয়ে দেওয়া হয় রোগীকে।
তথ্যনুযায়ী,সর্বশেষ গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি চালানে এক ভয়েল Rabix ভ্যাকসিন এসেছিলো। সেটা কয়েকদিনের ব্যবধানে শেষ হওয়ার পর অদ্যবদি কোন ভ্যাকসিন আসেনি মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এদিকে দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য খাতের কয়েক দশকের প্রচলিত স্লোগান “২টি সন্তানের বেশি নয়, ১টি হলে ভালো হয়” এ স্লোগানের কার্যক্রম অনুযায়ী জেলা, উপজেলা এমন কি ইউনিয়ন পর্যায়ে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আলোকে বাড়ি বাড়ি জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল মাঠ কর্মী দ্বারা পৌছানোর ঘোষনা দেই।
২০১৯ সালের পরিসংখ্যান বলছে শতকরা ৬৩% নারীরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যাবহারের আয়োতায় চলে এসেছে।তবে তার কোন ছিটেফোটা কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের। দীর্ঘ ১০ মাস অর্থাৎ প্রায় ১ বছর এ নিয়ন্ত্রণ পিল পায়না কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা গ্রহীতারা। খোজ নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে কর্তব্যরত নারী কর্মীকে চেয়ারে না পাওয়া গেলেও জানা যায় হাসপাতালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল নাই ১ মাসের ও বেশি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরেক সমস্যা বিতর্কিত এ্যাম্বুলেন্স সেবা। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশি টাকা নিয়ে সমালোচনায় আসেন ড্রাইভার এখলাস। তথ্য আছে, মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে যশোর সদর হাসপাতালে ভাড়া ৪৮০টাকা ফিক্সড থাকলেও এখলাস ৬শ, ৭শ, ১হাজার এমনকি কায়দা বুঝে ১৫শ টাকাও নিয়ে থাকেন। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এমন ভাবে রোগীদের কাছ থেকে বেশি অর্থ নেওয়া চলে আসছে বলে জানান সৈরাচারী আমলে আসা মাগুরার ড্রাইভার এখলাস। রোডে গাড়ি চললে খরচ আছে,বিভিন্ন জায়গাতে খরচ করা লাগে এমন কি নিজের টাকা দিয়েও গাড়ির কাজ করান ড্রাইভার নিজেই।
নিউজের কথা বলতে গেলে ইখলাস দাবী করেন প্রেসক্লাবের কোন সাংবাদিকের সাথে তার ঘনিষ্ঠতা আছে। তার জন্য কেউ কিছু করতে পারেনা। কয়েকদিন আগেও এ বিষয়ে তাকে বলা হলে এক সপ্তাহ ইচ্ছাকৃত ভাবে গাড়ির কাজ আছে দেখিয়ে নাটকীয় স্টাইক করে।পরবর্তীতে চাপে পড়ে আবার চালু করেন।
তথ্যমতে,গতকাল ৫ই মে থেকে আবারও লম্বা ছুটিতে গেছেন এ প্রভাবশালী ড্রাইভার এখলাস।৫ই মে এক ভ্যান চালক তার পরিবারে এক সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কম টাকায় গাড়ী খুজতে যেয়ে হাসপাতাল গেটেই কেঁদে ফেলেন। সর্বশেষ ঐ রেগী টাকার স্বল্পতায় নিজে ভ্যান চালিয়ে যশোর সদরে নিয়ে যাবেন বলে ভ্যান যোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। খোজ নিলে ড্রাইভার নেই,ছুটিতে গেছে বলে কানা যায়।
অন্তহীন সমস্যার সমাধান খোঁজা যেমন তেমন ভ্যাকসিন ও জন্মনিয়ন্ত্রন পিল শূন্যতাকে জাতীয় সমস্যা বলে জানান মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেের প্রধান তত্বাবধায়ক ফয়েজ আহম্মেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না ও জেলা সিভিল সার্জন এ তিন জন কর্মকর্তা।