
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টকশো অনুষ্ঠানে রুমিন ফারহানা কড়া ভাষায় এনসিপির উদ্দেশে বলেন, “এনসিপির দাবির ভার বিএনপি কেন নেবে? তারা যদি নিজেদেরকে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রধান শক্তি বলে দাবি করে, তাহলে তাদের উচিত নিজেদের এজেন্ডা নিজেরাই বাস্তবায়ন করা। বিএনপি তো তাদের মামা না, খালুও না।”
রুমিন ফারহানা মন্তব্য করেন, “তাদের দুইটি প্রধান দাবি—একটা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, আরেকটা হচ্ছে বিএনপিকে দিয়ে সকল সংস্কার করানো। যেন মামাবাড়ির যত আবদার, সবই বিএনপিকে দিয়ে মানাতে হবে। এটা কি যৌক্তিক দাবি?”
তিনি বলেন, “একটি রাজনৈতিক দলের ন্যূনতম গঠনতন্ত্র, আদর্শ, রূপরেখা, এবং জনসম্পৃক্ততা থাকা দরকার। এনসিপি এখনো এসব কিছুতে পরিপক্বতা দেখাতে পারেনি।”
রুমিন ফারহানা টকশোতে বলেন, “আমি জানি না এনসিপির কোনো গঠনতন্ত্র আছে কি না। তারা কোন আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করছে, সেটাও অজানা। তাদের রাজনীতি বলতে এখন পর্যন্ত যা দেখা গেছে, তা কেবল আওয়ামী লীগবিরোধিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।”
তিনি আরও বলেন, “যদি তারা মনে করে, তারাই দেশের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এনেছে, তাহলে তো তাদের জনপ্রিয়তায় নির্বাচনে জয়লাভ করার কথা। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯০টিতে জয়ী হওয়ার কথা। তাহলে নিজেরাই ক্ষমতায় গিয়ে দেশের সংস্কার করুক, বিএনপিকে কেন সেই দায়িত্ব নিতে হবে?”
রুমিন ফারহানা এনসিপিকে উদ্দেশ করে বলেন, “তারা যতই নিজেদের ‘মধ্যপন্থী’ বলুক না কেন, জনগণের কাছে তারা এখনো তাদের রাজনৈতিক অবস্থান, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, এবং জনস্বার্থে কী করতে চায়—এসব কিছু পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রতিটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে যায় জয়ী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে, হারের জন্য নয়। সেই হিসেবে প্রত্যেক দলের নিজস্ব রোডম্যাপ থাকতে হয়। কিন্তু এনসিপির কাছে এমন কোনো পরিকল্পনা আমরা এখনো দেখতে পাইনি।”
বিএনপির এই নেত্রী স্পষ্ট করে বলেন, “বিএনপি একটি পুরনো, পরিণত, এবং সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল। আমরা কারো এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার নই। আমাদের নিজস্ব রাজনৈতিক লক্ষ্য, রূপরেখা ও দায়বদ্ধতা আছে। সুতরাং অন্য দলের চাপিয়ে দেওয়া আদেশ বা দাবির ভার বিএনপির কাঁধে তুলে দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
রুমিন ফারহানার এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে স্পষ্ট একটি বার্তা দিয়েছে যে, বিএনপি কৌশলগত অংশীদারিত্ব বা জোটে থাকলেও কোনো দলকে ‘রিমোট কন্ট্রোলে’ চালাবে না, বা অন্য দলের কল্পিত অভ্যুত্থানের ভার নিজের ঘাড়ে নেবে না। এনসিপির ভবিষ্যৎ অবস্থান কতটা গ্রহণযোগ্য হয়, তা এখন অনেকাংশেই নির্ভর করছে তাদের স্বচ্ছতা, কার্যপরিকল্পনা ও জনগণের সঙ্গে সংযোগ তৈরির সক্ষমতার ওপর।