
মোঃ শাহজাহান বাশার,স্টাফ রিপোর্টার
আগামী ২৬ জুন থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। চলমান করোনা সংক্রমণ ও ডেঙ্গু বিস্তার বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবার দেশের প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেডিকেল টিম সক্রিয় রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক অফিস আদেশে সোমবার (১৬ জুন) জানানো হয়, কোনো পরীক্ষার্থী অসুস্থ হলে যেন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
অফিস আদেশে ‘বিষয়টি অতীব জরুরি’ উল্লেখ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তামূলক নির্দেশনাও দেওয়া হয়, যেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. মাস্ক বাধ্যতামূলক: পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কেন্দ্রে প্রবেশের সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।
২. হ্যান্ড স্যানিটাইজার: কেন্দ্রে প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩. পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণ: ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরীক্ষাকেন্দ্র এবং আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে।
৪. মশা নিধন: পরীক্ষার আগেই মশক নিধনের জন্য স্প্রে করতে হবে এবং প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিতে হবে।
৫. আসন বিন্যাস: পরীক্ষা কক্ষে আসন বিন্যাস বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
৬. মেডিকেল টিম সক্রিয়তা: প্রতিটি কেন্দ্রে মেডিকেল টিমের উপস্থিতি ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে।
৭. জনসচেতনতা ও নিরাপত্তা প্রচারণা: অভিভাবকদের কেন্দ্রে জটলা তৈরি থেকে বিরত রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচারণা চালাতে হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন।
২০২৪ সালের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন পরীক্ষার্থী। সে তুলনায় ২০২৫ সালে পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন।
দেশব্যাপী চলমান স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশে সম্পন্ন হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন সমন্বিতভাবে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে নজরদারি ও প্রস্তুতি নিশ্চিত করছে।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয় শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে, আর সেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় মেডিকেল টিম সক্রিয় রাখার সিদ্ধান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা পরীক্ষার্থীদের মানসিক শান্তি ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তবে বাস্তবায়নপর্বে যেন কোনও কেন্দ্রে অব্যবস্থা না থাকে, তা মনিটরিংয়ের জন্য বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন।
শিক্ষার্থীদের সফলতা এবং সুস্থতা কামনা করে আমরা আশা করি, এ উদ্যোগ আগামীতে একটি আদর্শ মডেল হিসেবে পরিগণিত হবে।