
মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা, ১৭ জুন ২০২৫
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক নিষ্ঠা, নির্যাতনের মুখেও দৃঢ় অবস্থান এবং দলের প্রতি অগাধ আনুগত্যের স্বীকৃতি হিসেবে হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একক ও কেন্দ্রীয়ভাবে মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাকে ঘিরে এখন এলাকার রাজনীতিতে উজ্জ্বল সম্ভাবনার আলো, আর সাধারণ ভোটারের মাঝে ফিরে এসেছে নতুন আশা।
একটি পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক পরিচয়
হাজী ইয়াছিন কেবল একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি একাধারে একজন সাবেক সংসদ সদস্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক, দক্ষিণ কুমিল্লা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবং চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন দলের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছেন।
দলের প্রতি তার নিষ্ঠা এবং মানুষের পাশে থেকে কাজ করার অভিজ্ঞতা তাকে করেছে মাঠপর্যায়ে জনআস্থার প্রতীক।
নির্যাতনের ইতিহাসেও অটল নেতৃত্ব
গত ১৫ বছর ধরে সরকারের রাজনৈতিক দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন হাজী ইয়াছিন। তার ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে অসংখ্য মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা। তা সত্ত্বেও তিনি মাঠ ছাড়েননি। বরং বলেন:
“আমি চাঁদাবাজদের ভোট চাই না… যদি আমার ঔরসজাত সন্তানও অনিয়মে জড়ায়, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের হাতে তুলে দেব।”
এ ধরনের স্পষ্টভাষী অবস্থান তাকে সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও অবস্থান: ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ও স্বচ্ছতা
তার নির্বাচনী এজেন্ডা পরিষ্কার—চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। তিনি গণমাধ্যমকে জানান,
“আমি চাই আগামী প্রজন্ম যেন একটা নিরাপদ, গণতান্ত্রিক ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ পায়।”
তিনি মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতি বদলাতে হলে গণতান্ত্রিক সংস্কার, সংবিধান মেনে নির্বাচন, এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কাঠামো আবশ্যক।
ভোট নিয়ে বক্তব্য: সময় ও সুষ্ঠুতার গুরুত্ব
নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে তিনি বলেন,
“জুন-জুলাইয়ে ভোট হলে জনগণের অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হবে। আবহাওয়া এবং বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা জরুরি।”
এতে স্পষ্ট হয়, তিনি কেবল রাজনীতি নয়, বাস্তবতাকেও গুরুত্ব দেন।
কুমিল্লা রাজনীতিতে ‘গেম চেঞ্জার’ সম্ভাবনা
স্থানীয় বিএনপি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাজী ইয়াছিনের প্রার্থীতা একটি “গেম চেঞ্জার” হতে পারে।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন,
“নির্বাচনের মাঠে নামার আগেই হাজী ইয়াছিন তার জনপ্রিয়তা ও অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। তিনি শুধু দলের নয়, সাধারণ মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন।”
তাঁর দীর্ঘ সময় ধরে নির্যাতন সহ্য করার মানসিক দৃঢ়তা, স্বচ্ছ অবস্থান এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা—সবমিলিয়ে আগামী নির্বাচনে তাকে এক শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিনের জন্য কুমিল্লা-৬ আসনের এই নির্বাচন কেবল একটি সাধারণ ভোটের লড়াই নয়, বরং এটি হতে যাচ্ছে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের এক নতুন সূচনা। তার প্রার্থিতা, বক্তব্য এবং রাজনৈতিক অবস্থান স্বচ্ছ ও সাহসী এক নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি তৈরি করছে—যা কুমিল্লা তথা জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।