
বিনোদন ডেস্ক
অভিনয় ক্যারিয়ারের হিসাবে তাসনিয়া ফারিণের চেয়ে তিন বছরের সিনিয়র সাবিলা নূর। টেলিভিশন নাটক, ওয়েব সিরিজ, ওয়েব ফিল্ম, এমনকি সিনেমাও করছেন, তবে পুরোপুরি বাণিজ্যিক ধারার সিনেমায় তাঁদের দেখা যায়নি। এবারের ঈদে ‘তাণ্ডব’ ও ‘ইনসাফ’ দিয়ে মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে নায়িকা হিসেবে তাঁদের অভিষেক হলো। শাকিব খান ও শরীফুল রাজের বিপরীতে দুজনকে পর্দায় দেখা গেছে।
সাবিলা ও ফারিণের জীবনে এবারের ঈদটাও তাই অন্য রকম। অন্যান্যবার পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে মেতে থাকলেও দুজনকে এবার প্রেক্ষাগৃহে ছুটতে হয়েছে। ছবি দেখতে আসা মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। হাসিমুখে ছবি তুলেছেন। সাবিলা বললেন, ‘এ এক দুর্দান্ত অভিষেক। দর্শকেরা দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন।’
জানা গেছে, গত ঈদুল ফিতরের সময় ‘তাণ্ডব’ ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পান সাবিলা নূর। পরিচালক রায়হান রাফী গল্প শোনান। সাবিলা বললেন, ‘ছবিটা সম্পর্কে আগে থেকেই জানতাম। ছবিতে যেহেতু মেগাস্টার শাকিব খান আছেন, তাই গল্প শোনামাত্র রাজি হয়ে যাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, এই সুন্দর সুযোগ না বলাটা মোটেও ঠিক হবে না। দুটি চমৎকার গানও ছিল। চমৎকার সব অভিনয়শিল্পীও ছিলেন।’
তাসনিয়া ফারিণ শুরুর দিকে ‘ফাতিমা’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেন। ধ্রুব হাসান পরিচালিত ছবিটি গত বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। দেশে মুক্তির আগে ছবিটি দেশের বাইরের একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়, পুরস্কারও অর্জন করে। তবে দেশের আগেই কলকাতার প্রেক্ষাগৃহে ফারিণের অভিষেক হয়েছে অতনু ঘোষের ‘আরো এক পৃথিবী’ দিয়ে। এ ছবির জন্য ভারতে পুরস্কারও পান ফারিণ। গত ঈদে কাজল আরেফিনের ওয়েব ফিল্ম মায়ায় অভিনয় করেন ফারিণ। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি বাণিজ্যিক সিনেমায় আসার আগের মহড়া।
‘ইনসাফ’ সেই সিনেমা। ছবিতে পুলিশ কর্মকর্তা জাহান খান চরিত্রে দেখা গেছে ফারিণকে। কয়েকটি অ্যাকশন দৃশ্যও করেছেন। তাই সিনেমাটি ছিল তাঁর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। অ্যাকশন দৃশ্যে শুটিং করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আহতও হয়েছেন। অভিনয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে ফারিণ বলেন, ‘আমি যখন অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে যাই, তখন শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। অ্যাকশন পরিচালকদের সঙ্গে আলাদা করে ধারণা নিতে হয়েছে। ক্যামেরার সামনে অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করাটা একেবারেই আলাদা অভিজ্ঞতা। সত্যি বলতে, এই দৃশ্যগুলো করতে গিয়ে একাধিকবার আঘাত পেয়েছি।’
‘ইনসাফ’ সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন ফারিণ। টেলিভিশন নাটকে যে ধরনের চরিত্রে দেখা গেছে, সিনেমায় একেবারে আলাদা। নাচলেন আইটেম গানেও। শুধুই কি গানে! ফারিণ জানালেন, আরও বেশি বাণিজ্যিক সিনেমায় অভিনয় করতে চান তিনি। তবে অবশ্যই গল্পটা পছন্দসই হতে হবে। ফারিণের ভাষ্যে, ‘আমি নিজেকে সব সময় ভিন্ন জায়গায় নিতে চেয়েছি। এখন আমার ধ্যানজ্ঞান সিনেমা। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে, “ইনসাফ” আমাকে ভিন্ন একটি জায়গা তৈরি করে দিতে পেরেছে।’
নাটকের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজ ‘মারকিউলিস’ ও ‘গোলাম মামুন’-এ অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন সাবিলা। বড় পর্দায় প্রথম অভিনয় করেন ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে। তবে বাণিজ্যিক ছবিতে এত সময় নিলেন কেন?
সাবিলা বললেন, ‘এর আগে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলাম। আরেকটু সময় নিতে চেয়েছি। মনে হয়েছে, সময় নিয়ে ভুল করিনি। এই সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পর্দায় উপস্থিতি কম থাকায় চ্যালেঞ্জিং ছিল। এত এত গুণী অভিনয়শিল্পী, সবার মাঝখান থেকে চরিত্রটাকে কীভাবে করে মনে রাখার মতো করে তোলা যায়, সেই চাপ ছিল। সবচেয়ে বড় নার্ভাসনেস ছিল, শাকিব খানের সঙ্গে পর্দা ভাগাভাগি করব, নাচব, অভিনয় করব—দর্শক কতটা গ্রহণ করবে, তা নিয়ে। কিন্তু প্রথম দিনের শুটিংয়ে তিনি সহশিল্পী হিসেবে অসাধারণ, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। একটিবারের জন্য বুঝতে দেননি, তাঁর সঙ্গে প্রথম কাজ করেছি। সামনে বাণিজ্যিক ছবিতে আরও বেশি কাজ করার ইচ্ছা আছে।