জুলাই ৮, ২০২৫
Home » বিএনপি নেতার আধিপত্য বিস্তারের লড়াই ভেড়ামারায় হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, গুলিবর্ষন ॥ আহত-১০
 উজ্জ্বল হোসেন ষ্টাফ রির্পোটার
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বিএনপি নেতার আধিপত্য বিস্তারের লড়াই কে কেন্দ্র করে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এবং গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ১০ বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন কে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুটি বাড়ি ভাংচুর, স্বর্নালংকার সহ লুটপাট এবং ১ টি দোকানে হামলা চালানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিতে রাতেই সেনাবাহিনীর চৌকষ একটি দল এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে পুরো ধরমপুর ইউনিয়ন জুড়ে।
সূত্র জানায়, ১৭ জুন মঙ্গলবার বিকালে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ইউনিয়ন সার্চ কমিটির মিটিং ছিল সাতবাড়ীয়াস্থ ইউনিয়ন পরিষদস্থ হলরুমে। ১২ সদস্য’র সার্চ কমিটির মিটিং সফল করতে ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম সরকার এবং সাবেক সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জ¥মান মিটু গ্রুপ এবং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রত্যাশী আলহাজ¦ শামসুল আলম গ্রুপ সহ¯্রাধিক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটায়। মিটিং শুরুর পূর্ব থেকেই ২ গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। রাত ৯টার দিকে মিটিং শেষ হয়ে গেলে সভাস্থল থেকে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকেন ইউনিয়ন সার্চ কমিটির নেতারা। এসময় আওয়ামীলীগ এবং জাসদের এক সময়ের নেতাদের বিএনপিতে পদপদবী দেওয়া হচ্ছে, এমন ধুয়া তুলে ধর ধর রব তোলা হয়। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই পেছন থেকে কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠে সভাস্থল। আতঙ্কে দিকবেদিক ছুটাছুটি করে স্থান ত্যাগ করে নেতাকর্মীরা। এলাপাতাড়ী হামলায় এবং গুলির ঘটনায় রবিউল ইসলাম সরকার ও আসাদুজ্জামান মিঠু গ্রুপের ২ সদস্য গুলিবৃদ্ধ হয়। তাদের কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিঠু জানিয়েছেন, ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপি সব সময় গনতান্ত্রিক এবং সুশৃঙ্খল। গনতান্ত্রিক উপায়েই ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কাজ চলমান আছে। কিন্তু ধরমপুর ইউনিয়নের এক নেতার একক আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টার কারনে গুলিবর্ষনের মত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলো। সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল হকের নির্দেশেই তাদের কতিপয় ক্যাডার আমাদের কর্মীদের উপর গুলি বর্ষন করে। এসময় আমাদের কর্মী আরিফ এবং হামিদুল গুলিবৃদ্ধ হয়।
ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সার্চ কমিটির সদস্য শামসুল খুবই বেপোয়ারা। সে আবার সভাপতি হতে চায়। দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে প্রত্যাখ্যান করছে  বুঝতে পেরেই সে এমন আচারন করছে। ১২ সদস্যের সার্চ কমিটির মিটিং হলেও সে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে ব্যাপক লোক সমাগম ঘটনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। শেষে অস্ত্র’র প্রদর্শনী দেখাতে গিয়ে গুলিবর্ষন করে। নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায় তার ক্যাডাররা।
এ দিকে ভেড়ামারা-মিরপুর আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ব্যারিষ্টার রাগিব রউফ চৌধুরী প্যানেলের সক্রিয় সদস্য, ধরমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রত্যাশী আলহাজ¦ শামসুল আলম নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেছেন, সার্চ কমিটির মিটিং শেষ করেই আসাদুজ্জামান মিঠু আমাকে গাড়িতে তুলে দিয়েছেন। আমি বা আমরা চলে আসার পরই সাতবাড়িয়ার বিএনপি নেতা ও যুবদলের আহবায়ক নান্টু মন্ডল’রা মুলত ষড়যন্ত্র শুরু করে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এই অপ্রপ্রচার চালাচ্ছে। ওরা মুলত আমাকে এবং আমার ছেলে যুবদল নেতা রাজন কে টার্গেট করেছে। তারা ভেড়ামারা সরকারী  কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব  আকাশের বাড়িতে নির্মম ভাবে হামলা চালিয়েছে। তাদের বাড়ি ও দোকানে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। তার বোনের স্বর্নালংকার এবং বাবার উপার্জিত টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।
ভেড়ামারা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব  ওয়াসিম দাবী করেন, এটা তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমরা চলে আসার পর আমাদের আত্বীয় টিপু মেকারকে ধাওয়া করে ধড়ে নিয়ে গিয়ে বেদম প্রহার করে, তাকে একটি ঘরে আটকে রাখে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে দুটি গ্রুপেই মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) রকিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিএনপির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *