
ফোরকান জামান, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় বেনাপোল স্থলবন্দরে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। টানা বৃষ্টিতে বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড ও গুদামে হাঁটুপানি জমে থাকায় পণ্য খালাস ও পরিবহন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে কয়েকটি প্রবেশগেট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রেল কর্তৃপক্ষ রেললাইন সম্প্রসারণকালে কোনো কালভার্ট না রেখে মাটি ভরাট করায় স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে বন্দরজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষায় একই দুর্ভোগ দেখা দিলেও এর কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি জমে থাকায় শ্রমিকদের চর্মরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। বন্দরের চ্যাটিজ টার্মিনাল এখন জলাশয়ে পরিণত হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন ট্রাক পার্কিং ও পণ্য খালাসের কাজ হতো।
বন্দরের সড়কের চেয়ে গুদামগুলো নিচু হওয়ায় পানির স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে আমদানি পণ্যের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি শ্রমিক ও কর্মীদের চলাফেরায় ভোগান্তি বাড়ছে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া নির্মিত অবকাঠামো এই সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বন্দর শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন হাঁটুপানির মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তারা চুলকানি ও নানা রোগে ভুগছেন। একই অভিযোগ ট্রাক চালকদেরও।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, এই বন্দর থেকেই বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। অথচ বছরের পর বছর এখানে পানি নিষ্কাশনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ মাটি ভরাট করে কালভার্ট না করায় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।