জুলাই ৮, ২০২৫
Home » সাংবাদিকের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষিকা ও চাঁদাবাজদের মাধ্যমে পরিকল্পিত অপপ্রচার
মোঃ ইমরান মিয়া, ফরিদপুর 
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা এবং দৈনিক কালবেলার সাবেক জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক তন্ময় উদ্দৌলার বিরুদ্ধে পূর্বে আদালতে নিষ্পত্তিকৃত একটি ব্যবসায়ীক লেনদেনকে কেন্দ্র করে নতুন করে সামাজিক মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার ১৭ জুন সকাল থেকে ১৭ জুন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা এবং আলফাডাঙ্গার শ্রীরামপুরের বাসিন্ধা রেহানা পারভীন রুমা এবং তার পিতা রওশন মিয়া তন্ময়ের বিরুদ্ধে পুরনো আর্থিক লেনদেন নিয়ে অভিযোগ করেন।
এই ভিডিওটি ভাইরাল করে আলফাডাঙ্গার আলোচিত চাঁদাবাজ আলমগীর কবির ও কবির হোসেন। এর আগে ১২ জুন দৈনিক কালবেলা ও অন্যান্য কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় আলমগীর ও কবিরের বিরুদ্ধে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তন্ময়ের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার শুরু করে।
রুমার মিথ্যাচারের ভিডিও বক্তব্যের পর খোজ নিয়ে জানা যায়, এটি ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের একটি ব্যবসায়িক অংশীদারি থেকে শুরু হয়। ১০ লক্ষ টাকার মূলধনে তন্ময় ও রুমা মিলে একটি গেট ওয়ার্কশপ ব্যবসা শুরু করেন। লিখিত চুক্তি অনুযায়ী, তন্ময় ৪ লক্ষ ও রুমা ৬ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন এবং ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ব্যবসা পরিচালনা শুরু হয়। রুমা নিয়মিত লভ্যাংশ গ্রহণ করলেও, একপর্যায়ে হঠাৎ মূলধন ফেরতের দাবি জানিয়ে ব্যবসা ছাড়েন।
তন্ময় তাৎক্ষণিকভাবে ১ লক্ষ টাকা ফেরত দেন এবং চুক্তি অনুযায়ী হিসাব করে বাকি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন।
অবশেষে ২০২৩ সালের ১৬ মে রুমা তন্ময়ের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। পাল্টা হিসেবে তন্ময়ও প্রতারণার অভিযোগে রুমা ও তার ভাই আল ইমরানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, যা আদালত গ্রহণ করে এবং সমন জারি করে। মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল মোল্যা সাক্ষী হিসেবে নাম দেন।
দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে রুমা আরও আড়াই লক্ষ টাকা গ্রহণ করে লিখিতভাবে মামলা প্রত্যাহার করে নেন।
কিন্তু ২০২৫ সালের ১৬ জুন রুমা ও তার বাবা একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেন, যা আলমগীর কবির ও কবির হোসেন নামের দুই ব্যক্তি তাদের ফেসবুক পেজ থেকে ছড়িয়ে দেন। এর আগে ১২ জুন দৈনিক কালবেলায় “ফরিদপুরে বাল্যবিয়ে ঠেকানোর নামে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এই প্রতিশোধপরায়ণ তৎপরতা শুরু হয়।
রুমার দায়ের করা মামলার সাক্ষী, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল মোল্যা বলেন, “মামলাটি আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে শেষ হয়েছে। রুমার এই ভিডিও প্রকাশ আদালত অবমাননার শামিল এবং এর পেছনে আলমগীর ও কবিরের কারণ রয়েছে।” তিনি আরও জানান, “রুমা সম্ভবত সাংবাদিক তন্ময়ের সাথে আলমগীরদের সম্পর্কের জের ধরে বুঝতে পারেননি এই বিষয়টি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার কুফল।”
সাংবাদিক তন্ময় উদ্দৌলা বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা করছি। একটি প্রভাবশালী প্রতারক চক্র আমাকে হয়রানি করতে মরিয়া। আমি এর বিরুদ্ধে মানহানি, আদালত অবমাননা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
রেহানা পারভীন রুমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি প্রথমে ফোন রিসিভ করলেও পরে এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান এবং আর ফোন রিসিভ করেননি।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *