জুলাই ১২, ২০২৫
Home » কটিয়াদীতে বেকারত্ব কমাচ্ছে অটোরিকশা বাহন

রতন ঘোষ, কটিয়াদী প্রতিনিধি

এক সময়  কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌর সদর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বেড়ে যায় বেকারত্বের সংখ্যা। ফলে   সমাজের নানা ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয় । বেড়ে যায়  চুরি ছিনতাই এর মত অপরাধও। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের যেসব যুবকরা, শহরের বিভিন্ন গার্মেন্টস কোম্পানিতে চাকরি করতেন, তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন কারনে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ছিলেন।

  সম্প্রতি কটিয়াদীতে ব্যাপক হারে বেড়েছে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা।গ্রামের বেকার যুবকরা বর্তমানে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বিভিন্ন কারণে যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের একটি অংশ বর্তমানে অটোরিকশা চালিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন ।এতে যেমন বেকারত্বের সংখ্যা কমেছে অন্যদিকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও বেড়েছে । বেসরকারি হিসেবে উপজেলায় প্রায় ৪  থেকে ৫ হাজার অটোরিকশা রয়েছে এরমধ্যে আবার বিভাটেকের সংখ্যাও কম নয়। অধিকাংশ চালকই ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের যুবক। তারা আজ জীবিকা নির্বাহে লড়াই করে যাচ্ছেন। চালকদের একটি সূত্র বলছে, যাদের অটোরিকশা আছে তাদের অধিকাংশই এনজিও  অথবা স্থানীয় সমিতি থেকে কিস্তির মাধ্যমে গাড়ি গুলি নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নগদ অর্থ দিয়েও অটোরিকশা  ক্রয় করেছেন। এমন সংখ্যা আবার খুবই কম। চালকরা মনে করেন অটোরিকশা  চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। কেননা করোনা সংকটে অনেকেই বিপর্যস্ত, তাই অটোরিকশার মাধ্যমে অর্থনৈতিক  স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেক যুবক। বিশেষ করে স্থানীয় এনজিও  এবং ব্যাংক এদের ভূমিকা ও কম নয় বলে জানিয়েছেন চালকরা। মসুয়া গ্রামের যুবক ইমরান হুসাইন (২৮) জানান তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কিন্তু টাইফয়েড জ্বরের কারণে তার চাকরি চলে যায়। তারপর বেশ কয়েক মাস বাড়িতে বেকার ছিলাম, কোন কাজ ছিল না। এরপর কিস্তির মাধ্যমে অটোরিকশা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ  শুরু করি। তারপর থেকেই বদলে যেতে শুরু করে আমার দৈনন্দিন  জীবন। আমি বর্তমানে একজন সফল যুবক। করগাঁও গ্রামের আতাউল্লাহ মিয়া (২৬)জানান কোন কাজ না পেয়ে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা ক্রয় করে চালানো শুরু করি। তিনি আরো জানান বর্তমানে আমার  দৈনিক আয় ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা। ইতিমধ্যে আমি আমার ঋণের কিস্তির টাকা শেষ পর্যায়ে। প্রতিদিন আমি যে টাকা পাই  তাতে আমার পরিবারকে ভালোভাবে সহযোগিতা করতে পারছি। কটিয়াদী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম এ ব্যাপারে বলেন, “উপজেলায় দিন দিন অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ছে, পাশাপাশি বেকারত্ব সংখ্যা ও কমেছে। ফলে গ্রামের চুরি ছিনতাই এর মত ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে। তবে অটোরিকশার  সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন রাস্তায় দেখা দিয়েছে যানজট। তাই এদেরকে লাইসেন্সের আওতায় আনতে পারলে যেমন সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হবে অপরদিকে সরকারেরও রাজস্ব আয় বাড়বে”।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *