

মোঃ শাহজাহান বাশার, স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে একযোগে অভিযান চালিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। রোববার (২২ জুন) সকাল থেকে পৃথক তিনটি এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে শতাধিক অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং প্রায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ সোমবার (২৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
রোববার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাছিবুর রহমানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলার মদনপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া পাঁচটি হোটেল—ভাই ভাই হোটেল, আজমেরী হোটেল, নিরালা-২ হোটেল, চাচা ভাতিজা হোটেল এবং আল মদিনা হোটেলের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
এ সময় জব্দ করা হয় ১১টি স্টার বার্নার, ১১টি মডিফাইড বার্নার, ৭টি কম্প্রেসার, ৩টি ডাবল চুলা, ২টি সিঙ্গেল চুলা এবং ১টি তন্দুল। সংযোগ বিচ্ছিন্নের পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একই দিনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে টাঙ্গাইল জেলার গোড়াই এলাকায় দুটি স্পটে অভিযান চালানো হয়। এ অভিযানে ৯টি অবৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তিতাস কর্তৃপক্ষ জানায়, সংযোগ বিচ্ছিন্নকালে প্রায় ৫৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ৩/৪ ইঞ্চি পাইপ, ৯টি রেগুলেটর এবং ৫টি লক উইং কক অপসারণ ও জব্দ করা হয়েছে। এসব অপরাধে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
একইদিনে রাজধানী সংলগ্ন ইস্ট টাউন আবাসিক প্রকল্পেও পরিচালিত হয় বিশেষ অভিযান। সেখানে ২৫টি আবাসিক চুলার উৎস কিলিং (স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন) করা হয়। অভিযানকালে জব্দ করা হয় ১ ইঞ্চি ব্যাসের ১০০ ফিট এমএস পাইপ, ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি ব্যাসের ২০০ ফিট জি আই পাইপ, ৫টি কম্প্রেসার, ১টি রেগুলেটর, ১১টি স্টার বার্নার ও ৪টি মডিফাইড বার্নার।
তিতাস গ্যাসের এক কর্মকর্তা জানান, “অবৈধ সংযোগকারীরা দেশের গ্যাস নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য হুমকি। এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নিয়মিতভাবে এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হবে।”
তিনি আরও জানান, এসব অবৈধ সংযোগের কারণে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে
তিতাসের ধারাবাহিক অভিযানের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। গ্যাস অপচয় রোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই অভিযানকে অনেকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও কিছু এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবৈধ সংযোগ পুনঃস্থাপনের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না সচেতন নাগরিকরা।
এ বিষয়ে তিতাসের একজন প্রকৌশলী বলেন, “আমরা শুধু সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেই দায়িত্ব শেষ করছি না, পাশাপাশি উৎস স্থায়ীভাবে কেটে দিচ্ছি যেন কেউ পুনরায় সংযোগ নিতে না পারে।”