Dhaka 3:32 pm, Saturday, 8 November 2025

হবিগঞ্জে প্রভাবশালীর দখলে হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর মাজার

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:47:32 pm, Monday, 28 July 2025
  • 238 Time View
সারোয়ার নেওয়াজ শামীম, হবিগঞ্জ, চুনারুঘাট
হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার আলাপুর গ্রামের হযরত আব্দুল্লাহ খাঁনের মাজার এর জমি দখল করে রেখেছে কিছু ক্ষমতাশীল ব্যাক্তিরা। স্হানীয় সুত্রে জানা যায়,প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মাজারের বাৎসরিক উরস উদযাপন করা হয়ে থাকে। উক্ত উরসে সরাইল, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবারিয়া,বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সহ উনার বিভিন্ন আশেকান ও ভক্তবৃন্দরা এই উরসে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
তারা আরও জানান, হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন ওলী ছিলেন অনেক গুনের অধিকারী। প্রায় ৮০ বছর আগে এই ওলী শাহাদাত বরন করার পর উনার মাজার তৈরী করা হয়ে থাকে। আর ঠিক তখন থেকেই উনার মাজারে উনার ভক্তবৃন্দ ও আশেকান এবং মুরিদানরা মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসা যাওয়া করেন।
হযরত আব্দুলাহ খাঁন সাহেবের মাজারের খাদেম এর দায়িত্বে ও তত্বাবধানে যিনি আছেন, তিনি এলাকার গুনিজন জনাব আব্দুল ওয়াহেদ খাঁন। যিনি বিশিষ্ট  দন্ত চিকিৎসক আব্দুর রকিব খানের পিতা।  তিনি জানান, হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর গুনাগুন ছিলো অনেক, যা মুখে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এবং উনার ভক্ত আশেকানরা আছে অনেক যারা প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং বাৎসরিক উরসে উপস্থিত থাকেন। স্হানীয়রা জানায়, আলাপুর গ্রামের, ৫০০ শত বছরের পুরনো আলাপুর জামে মসজিদটি ও নির্মান করেন,হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর পূর্বপুরুষ গন।
তারা আরও জানান, এই মাজারে কোনে ধরনের গান বাজনা করা হয় না। মাজারে, নামাজ, জিকির, কোরআন পাক তেলাওয়াত করা হয়। এবং প্রতি বৃহস্পতিবার এশারের নামাজ শেষে, মাজারে জিকির আযহার করা হয়। গ্রাম বাসীর জন্য এবং দেশের মানুষের কল্যান কামনায় বিশেষভাবে মোনাজাত করা হয়ে থাকে।
এলাকবাসীরা বিশেষ ভাবে বলেন, এলাকার কিছু ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা মাজারের জমি দখল করে রেখেছে, তারা মাজারের পরিবেশ বিনষ্ট করছে। মাজারে ভক্তরা এসে ঠিকমতো জিয়ারত করতে পারেন না। এইসব ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা বাৎসরিক উরসে বিভিন্ন ভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে। তারা মাজারের পাশে গরু ছাগল চড়ায়,বন রাখে, এবং তাদের নিত্যদিনের ব্যাবহৃত কাপর চোপরও মাজারের পাশে শুকাতে দেয়।
উল্লেখ্য যে মাজারের পাশেই আছে ছোটো একখানা মসজিদ আর এর পাশেই লেখা আছে ওইখানে গরু ছাগল চড়ানো নিষেধ। কিন্তু কে শুনছে কার কথা, বিনষ্ট করা হচ্ছে মাজারের পরিবেশ। রক্ষণাবেক্ষণ করতে দিচ্ছে না গ্রামবাসীদের। জোর আর ক্ষমতা দেখিয়ে ভোগ দখল করে আছেন ক্ষমতাশীলরা।
তাদের নামে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। কেউ বলেন, তারা কওমী মতাদর্শের বলে তারা মাজারের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। আবার কেউ বলেন ওরা মাজারের  উরসে বাধা দেয় ঠিকই কিন্তু তবারক খাওয়ার সময় তারা থাকে সবার শীর্ষে। মাজারের পবিত্রতা নষ্ট করে, আশেকানদের অসুবিধা সৃষ্টি করছে তারা।
মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে মাজারে প্রবেশ করলে, সরেজমিনে দেখা মিলে গরু দিয়ে যেনো হাল চাষ করা হচ্ছে মাজারের চারপাশ, মাজারের পাশে রাখা হয়েছে বনের লাছ। দুঃখের বিষয় হলো মাজারের পাশে একখানা মসজিদ দেখতে পেলেও নেই কোনো পরিবেশ নেই  কোনো পরিচ্ছন্নতা এবং সংরক্ষণ। মসজিদের প্রবেশ মুখেও দেখা মিলেছে গরু চড়ানোর দৃশ্য।
চারদিকে তাকালে বুঝা যায় আমরা হয়তো আছি কোনো এক জঙ্গলে।
অথচ মাজার থেকে একটু দূরে বসবাস করছেন যারা তাদের যেনো কোনে কিছুতেই নেই কোনো কমতি। মাজারের ভিতরে যেমন জিয়ারত করার কোনো পরিবেশ নেই। তেমনি ভাবে বাহির থেকে  ও জিয়ারত করার নেই কোনো সুব্যবস্থা।
হবিগঞ্জ বাসী জানতে চাচ্ছে, যেই মাজারে নেই কোনো গান-বাজনা,নেই কোনো অবৈধ আসর তারপরও কেনো মাজারে কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে  তারা? মাজারের পরিবেশ কেনো নষ্ট করছে তারা?
এইসব ভুমিদস্যুদের ক্ষমতার উৎস কী? কোথায় থেকে পাচ্ছেন তারা এসব ক্ষমতা৷ কিসের বলে, কিসের জোরে তারা মাজারের পরিবেশ বিনষ্ট করছে, কার ছত্রছায়ায় মাজারের জমি দখল করে ভোগ করছে তারা।
এসব প্রশ্ন যেনো ঘূর্নিপাক খাচ্ছে প্রত্যকের মনে।
গ্রাম বাসীদের দাবী, বর্তমান দেশের চাঁদাবাজ, দূর্নীতিবাজ, ভূমিদখলকারী,স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সরকার কঠিন অভিযান চালাচ্ছেন এবং তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।  তাই আমরা চাই এদের দখল থেকে আমাদের মাজারের জমি মুক্তি পাক, মাজারের পবিত্রতা রক্ষা করা হউক। আর  হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন ওলীর যেসকল ভক্ত আশেকান আছে তারা যেন সুন্দর ও সুষ্টভাবে জিয়ারত করতে পারেন । মাজারের কার্যক্রমে যেনো কেউ বাধাগ্রস্থ না করে।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বুলবুল এর নেতৃত্বে এক বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত

হবিগঞ্জে প্রভাবশালীর দখলে হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর মাজার

Update Time : 01:47:32 pm, Monday, 28 July 2025
সারোয়ার নেওয়াজ শামীম, হবিগঞ্জ, চুনারুঘাট
হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার আলাপুর গ্রামের হযরত আব্দুল্লাহ খাঁনের মাজার এর জমি দখল করে রেখেছে কিছু ক্ষমতাশীল ব্যাক্তিরা। স্হানীয় সুত্রে জানা যায়,প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মাজারের বাৎসরিক উরস উদযাপন করা হয়ে থাকে। উক্ত উরসে সরাইল, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবারিয়া,বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার সহ উনার বিভিন্ন আশেকান ও ভক্তবৃন্দরা এই উরসে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
তারা আরও জানান, হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন ওলী ছিলেন অনেক গুনের অধিকারী। প্রায় ৮০ বছর আগে এই ওলী শাহাদাত বরন করার পর উনার মাজার তৈরী করা হয়ে থাকে। আর ঠিক তখন থেকেই উনার মাজারে উনার ভক্তবৃন্দ ও আশেকান এবং মুরিদানরা মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে আসা যাওয়া করেন।
হযরত আব্দুলাহ খাঁন সাহেবের মাজারের খাদেম এর দায়িত্বে ও তত্বাবধানে যিনি আছেন, তিনি এলাকার গুনিজন জনাব আব্দুল ওয়াহেদ খাঁন। যিনি বিশিষ্ট  দন্ত চিকিৎসক আব্দুর রকিব খানের পিতা।  তিনি জানান, হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর গুনাগুন ছিলো অনেক, যা মুখে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। এবং উনার ভক্ত আশেকানরা আছে অনেক যারা প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার এবং বাৎসরিক উরসে উপস্থিত থাকেন। স্হানীয়রা জানায়, আলাপুর গ্রামের, ৫০০ শত বছরের পুরনো আলাপুর জামে মসজিদটি ও নির্মান করেন,হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন এর পূর্বপুরুষ গন।
তারা আরও জানান, এই মাজারে কোনে ধরনের গান বাজনা করা হয় না। মাজারে, নামাজ, জিকির, কোরআন পাক তেলাওয়াত করা হয়। এবং প্রতি বৃহস্পতিবার এশারের নামাজ শেষে, মাজারে জিকির আযহার করা হয়। গ্রাম বাসীর জন্য এবং দেশের মানুষের কল্যান কামনায় বিশেষভাবে মোনাজাত করা হয়ে থাকে।
এলাকবাসীরা বিশেষ ভাবে বলেন, এলাকার কিছু ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা মাজারের জমি দখল করে রেখেছে, তারা মাজারের পরিবেশ বিনষ্ট করছে। মাজারে ভক্তরা এসে ঠিকমতো জিয়ারত করতে পারেন না। এইসব ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা বাৎসরিক উরসে বিভিন্ন ভাবে সমস্যা সৃষ্টি করে। তারা মাজারের পাশে গরু ছাগল চড়ায়,বন রাখে, এবং তাদের নিত্যদিনের ব্যাবহৃত কাপর চোপরও মাজারের পাশে শুকাতে দেয়।
উল্লেখ্য যে মাজারের পাশেই আছে ছোটো একখানা মসজিদ আর এর পাশেই লেখা আছে ওইখানে গরু ছাগল চড়ানো নিষেধ। কিন্তু কে শুনছে কার কথা, বিনষ্ট করা হচ্ছে মাজারের পরিবেশ। রক্ষণাবেক্ষণ করতে দিচ্ছে না গ্রামবাসীদের। জোর আর ক্ষমতা দেখিয়ে ভোগ দখল করে আছেন ক্ষমতাশীলরা।
তাদের নামে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। কেউ বলেন, তারা কওমী মতাদর্শের বলে তারা মাজারের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। আবার কেউ বলেন ওরা মাজারের  উরসে বাধা দেয় ঠিকই কিন্তু তবারক খাওয়ার সময় তারা থাকে সবার শীর্ষে। মাজারের পবিত্রতা নষ্ট করে, আশেকানদের অসুবিধা সৃষ্টি করছে তারা।
মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে মাজারে প্রবেশ করলে, সরেজমিনে দেখা মিলে গরু দিয়ে যেনো হাল চাষ করা হচ্ছে মাজারের চারপাশ, মাজারের পাশে রাখা হয়েছে বনের লাছ। দুঃখের বিষয় হলো মাজারের পাশে একখানা মসজিদ দেখতে পেলেও নেই কোনো পরিবেশ নেই  কোনো পরিচ্ছন্নতা এবং সংরক্ষণ। মসজিদের প্রবেশ মুখেও দেখা মিলেছে গরু চড়ানোর দৃশ্য।
চারদিকে তাকালে বুঝা যায় আমরা হয়তো আছি কোনো এক জঙ্গলে।
অথচ মাজার থেকে একটু দূরে বসবাস করছেন যারা তাদের যেনো কোনে কিছুতেই নেই কোনো কমতি। মাজারের ভিতরে যেমন জিয়ারত করার কোনো পরিবেশ নেই। তেমনি ভাবে বাহির থেকে  ও জিয়ারত করার নেই কোনো সুব্যবস্থা।
হবিগঞ্জ বাসী জানতে চাচ্ছে, যেই মাজারে নেই কোনো গান-বাজনা,নেই কোনো অবৈধ আসর তারপরও কেনো মাজারে কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে  তারা? মাজারের পরিবেশ কেনো নষ্ট করছে তারা?
এইসব ভুমিদস্যুদের ক্ষমতার উৎস কী? কোথায় থেকে পাচ্ছেন তারা এসব ক্ষমতা৷ কিসের বলে, কিসের জোরে তারা মাজারের পরিবেশ বিনষ্ট করছে, কার ছত্রছায়ায় মাজারের জমি দখল করে ভোগ করছে তারা।
এসব প্রশ্ন যেনো ঘূর্নিপাক খাচ্ছে প্রত্যকের মনে।
গ্রাম বাসীদের দাবী, বর্তমান দেশের চাঁদাবাজ, দূর্নীতিবাজ, ভূমিদখলকারী,স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে সরকার কঠিন অভিযান চালাচ্ছেন এবং তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।  তাই আমরা চাই এদের দখল থেকে আমাদের মাজারের জমি মুক্তি পাক, মাজারের পবিত্রতা রক্ষা করা হউক। আর  হযরত আব্দুল্লাহ খাঁন ওলীর যেসকল ভক্ত আশেকান আছে তারা যেন সুন্দর ও সুষ্টভাবে জিয়ারত করতে পারেন । মাজারের কার্যক্রমে যেনো কেউ বাধাগ্রস্থ না করে।