Dhaka 6:36 am, Saturday, 15 November 2025

প্রত্যেক শিশুর জন্য মাথাপিছু ৬০ হাজারের বেশি টাকা দেওয়ার ঘোষণা চীনের

জন্মহার বাড়াতে প্রত্যেক শিশুর জন্য মাথাপিছু বাৎসরিক ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ হাজার ৪৭৩ টাকা) প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। শিশুর জন্মের পর থেকে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি বছর পিতামাতাকে প্রদান করা হবে এই পরিমাণ অর্থ।

অর্থাৎ এখন চীনে কোনো শিশু জন্ম নিলে আগামী ৩ বছরে সরকারের কাছ থেকে ওই শিশুর পিতামাতা পাবেন মোট ১০ হাজার ৮০০ ইউয়ান বা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। শিশুদের লালনপালনের জন্য দেওয়া হবে এই অর্থ।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়েছে এই প্রকল্প। যেসব দম্পতি প্রকল্প শুরুর তারিখ থেকে এ পর্যন্ত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাদেরকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। আরও বলা হয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া শিশুর জন্যও অর্থ পাবেন পিতামাতারা।

সরকারি কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীনজুড়ে প্রায় ২ কোটি পরিবার উপকৃত হবেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি চীনের বিভিন্ন প্রাদেশিক ও স্থানীয় সরকারও জন্মহার বাড়াতে প্রণোদনা ঘোষণা করছে। চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লিয়াওনিংয়ের সরকার জানিয়েছে, প্রদেশে বসবাসরত যেসব দম্পতি সদ্য পিতামাতা হয়েছেন এবং যেসব দম্পতির সন্তানের বয়স তিন বছরের কম— তাদের প্রত্যেককে মাসে ৫০০ ইউয়ান করে ভাতা প্রদান করা হবে।

একদা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন এখন নিম্নজন্মহার সংকটে ভুগছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত শতকের আশির দশকে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছিল চীন। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে জন্মহার হ্রাস পেতে থাকায় লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা, বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কর্মক্ষম নারী-পুরুষের সংখ্যা হ্রাসের মতো সংকটগুলো প্রকট হয়ে উঠতে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে ২০১৬ সালে এক সন্তাননীতি বাতিল করে ২ সন্তাননীতি চালু করে বেইজিং।

পরে ২০২১ সালে দুই সন্তাননীতি বাতিল করে ৩ সন্তাননীতি চালু করা হয়, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি, উপরন্তু ২০২২, ‘২৩ এবং ’২৪— টানা ৩ বছর নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে চীন।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায় ২০২৩ সালে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাৎসরিক জন্মহার না বাড়লে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের জনসংখ্যা নেমে আসবে ১৩০ কোটিতে। ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে হবে ৮০ কোটি।

Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

নরসিংদী সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান বীনা গ্রেপ্তার

প্রত্যেক শিশুর জন্য মাথাপিছু ৬০ হাজারের বেশি টাকা দেওয়ার ঘোষণা চীনের

Update Time : 08:54:18 am, Tuesday, 29 July 2025

জন্মহার বাড়াতে প্রত্যেক শিশুর জন্য মাথাপিছু বাৎসরিক ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬১ হাজার ৪৭৩ টাকা) প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। শিশুর জন্মের পর থেকে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি বছর পিতামাতাকে প্রদান করা হবে এই পরিমাণ অর্থ।

অর্থাৎ এখন চীনে কোনো শিশু জন্ম নিলে আগামী ৩ বছরে সরকারের কাছ থেকে ওই শিশুর পিতামাতা পাবেন মোট ১০ হাজার ৮০০ ইউয়ান বা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। শিশুদের লালনপালনের জন্য দেওয়া হবে এই অর্থ।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হয়েছে এই প্রকল্প। যেসব দম্পতি প্রকল্প শুরুর তারিখ থেকে এ পর্যন্ত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাদেরকে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। আরও বলা হয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া শিশুর জন্যও অর্থ পাবেন পিতামাতারা।

সরকারি কর্মকর্তারা আশা করছেন, নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে চীনজুড়ে প্রায় ২ কোটি পরিবার উপকৃত হবেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি চীনের বিভিন্ন প্রাদেশিক ও স্থানীয় সরকারও জন্মহার বাড়াতে প্রণোদনা ঘোষণা করছে। চীনের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লিয়াওনিংয়ের সরকার জানিয়েছে, প্রদেশে বসবাসরত যেসব দম্পতি সদ্য পিতামাতা হয়েছেন এবং যেসব দম্পতির সন্তানের বয়স তিন বছরের কম— তাদের প্রত্যেককে মাসে ৫০০ ইউয়ান করে ভাতা প্রদান করা হবে।

একদা বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন এখন নিম্নজন্মহার সংকটে ভুগছে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য গত শতকের আশির দশকে এক সন্তান নীতি গ্রহণ করেছিল চীন। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে জন্মহার হ্রাস পেতে থাকায় লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা, বয়স্ক লোকজনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কর্মক্ষম নারী-পুরুষের সংখ্যা হ্রাসের মতো সংকটগুলো প্রকট হয়ে উঠতে থাকে এবং ফলশ্রুতিতে ২০১৬ সালে এক সন্তাননীতি বাতিল করে ২ সন্তাননীতি চালু করে বেইজিং।

পরে ২০২১ সালে দুই সন্তাননীতি বাতিল করে ৩ সন্তাননীতি চালু করা হয়, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি, উপরন্তু ২০২২, ‘২৩ এবং ’২৪— টানা ৩ বছর নিম্ন জন্মহারের রেকর্ড করেছে চীন।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা হারায় ২০২৩ সালে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাৎসরিক জন্মহার না বাড়লে ২০৫০ সালের মধ্যে চীনের জনসংখ্যা নেমে আসবে ১৩০ কোটিতে। ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও কমে হবে ৮০ কোটি।