Dhaka 5:36 am, Saturday, 15 November 2025

জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন দুবার ডুবছে শিকলবাহা, বেড়িবাঁধের দাবি

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:45:10 am, Thursday, 31 July 2025
  • 164 Time View
সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি 
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন দুবার করে ডুবছে শিকলবাহা উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এতে করে হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে দিন পার করছেন। ভোগান্তি লাগবে বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নতুন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে জোয়ারের পানিতে শিকলবাহা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এলাকাবাসীরা জানান, এলাকার মানুষের মৃত্যু হলে দাফনের জায়গাটুকুও অবশিষ্ট নেই অনেক পরিবারের।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম ও জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন ডুবছে শিকলবাহার মানুষ। ১৯৯৬ সালে শিকলবাহা খালের তীরে ব্লক নির্মিত হলেও বর্তমানে তা দেবে যাওয়ায় নতুন করে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে এলাকাবাসীর ভোগান্তি কমছে না।
স্থানীয়দের মতে, শিকলবাহা খালের পাশে পুরনো বেড়িবাঁধটি ৩ থেকে ৪ ফুট নিচে দেবে যাওয়ায় এ অংশ দিয়ে প্রতিবছর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ফলে ওই গ্রামের হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে।
এছাড়া পুরানো বেড়িবাঁধ নদীর তলদেশে দেবে যাওয়ায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে শিকলবাহা ইউনিয়নের এক থেকে তিন নম্বর ওয়ার্ডের বখতিয়ার পাড়া, হাজীপাড়া, আমেনা রহমান এলাকা, মিজ্জি গুষ্টি, মইশউড়া,তাতিয়া পুকুরপাড়া, ইব্রাহিম মাঝির পুকুর পাড়, সৈয়দ মাঝির বাড়ি, নোয়াপাড়া, পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা ও মাস্টারহাটসহ বিভিন্ন প্লাবিত হয়। স্থায়ী বেড়িবাঁধ না হলে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে চাষাবাদসহ বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় স্থানীয়রা।
এদিকে নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে শিক্ষাকার্যক্রম ব‍্যাহত হচ্ছে উত্তর শিকলবাহা আহছানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের। প্রায়ই বিদ‍্যালয়ের নিচ তলার শ্রেণিকক্ষ ডুবে থাকে পানিতে। ভোগান্তির শিকার শিকলবাহা ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হক হাজীর বাড়ির ব্যবসায়ী আব্দুল নবী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমরা পানিবন্দি। রান্নাবান্নাও বন্ধ। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্থায়ী বেড়িবাঁধ করার দাবি জানাচ্ছি।
আরেক বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, বর্ষাকাল আসলেই আমাদের কষ্ট বাড়ে। বের হওয়ার পথ নেই। এসব সমস্যা দেখারও যেন কেউ নেই। পানি জমে থাকায় আব্দুল নবীর মত অবস্থা আলী বাবুর্চি, আজাদ উদ্দিন, ইকবাল হোসেনসহ আরও অনেকের। বাধ্য হয়ে অনেকে উঠেছেন ভাড়া বাসায়।
জানতে চাইলে শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম  দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন কে  বলেন, মানুষ অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করার ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। তবে তৎক্ষণাৎ কিছু করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাছরীন আক্তার দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন কে   বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। খোঁজ নিয়ে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করব।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

নরসিংদী সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়ন এর সাবেক চেয়ারম্যান বীনা গ্রেপ্তার

জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন দুবার ডুবছে শিকলবাহা, বেড়িবাঁধের দাবি

Update Time : 04:45:10 am, Thursday, 31 July 2025
সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি 
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন দুবার করে ডুবছে শিকলবাহা উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এতে করে হাজারো মানুষ প্রতিনিয়ত পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে দিন পার করছেন। ভোগান্তি লাগবে বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নতুন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলে জোয়ারের পানিতে শিকলবাহা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এক, দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এলাকাবাসীরা জানান, এলাকার মানুষের মৃত্যু হলে দাফনের জায়গাটুকুও অবশিষ্ট নেই অনেক পরিবারের।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম ও জোয়ারের পানিতে প্রতিদিন ডুবছে শিকলবাহার মানুষ। ১৯৯৬ সালে শিকলবাহা খালের তীরে ব্লক নির্মিত হলেও বর্তমানে তা দেবে যাওয়ায় নতুন করে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে এলাকাবাসীর ভোগান্তি কমছে না।
স্থানীয়দের মতে, শিকলবাহা খালের পাশে পুরনো বেড়িবাঁধটি ৩ থেকে ৪ ফুট নিচে দেবে যাওয়ায় এ অংশ দিয়ে প্রতিবছর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ফলে ওই গ্রামের হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে।
এছাড়া পুরানো বেড়িবাঁধ নদীর তলদেশে দেবে যাওয়ায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে শিকলবাহা ইউনিয়নের এক থেকে তিন নম্বর ওয়ার্ডের বখতিয়ার পাড়া, হাজীপাড়া, আমেনা রহমান এলাকা, মিজ্জি গুষ্টি, মইশউড়া,তাতিয়া পুকুরপাড়া, ইব্রাহিম মাঝির পুকুর পাড়, সৈয়দ মাঝির বাড়ি, নোয়াপাড়া, পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা ও মাস্টারহাটসহ বিভিন্ন প্লাবিত হয়। স্থায়ী বেড়িবাঁধ না হলে অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে চাষাবাদসহ বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় স্থানীয়রা।
এদিকে নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে শিক্ষাকার্যক্রম ব‍্যাহত হচ্ছে উত্তর শিকলবাহা আহছানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয়ের। প্রায়ই বিদ‍্যালয়ের নিচ তলার শ্রেণিকক্ষ ডুবে থাকে পানিতে। ভোগান্তির শিকার শিকলবাহা ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হক হাজীর বাড়ির ব্যবসায়ী আব্দুল নবী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে আমরা পানিবন্দি। রান্নাবান্নাও বন্ধ। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে স্থায়ী বেড়িবাঁধ করার দাবি জানাচ্ছি।
আরেক বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, বর্ষাকাল আসলেই আমাদের কষ্ট বাড়ে। বের হওয়ার পথ নেই। এসব সমস্যা দেখারও যেন কেউ নেই। পানি জমে থাকায় আব্দুল নবীর মত অবস্থা আলী বাবুর্চি, আজাদ উদ্দিন, ইকবাল হোসেনসহ আরও অনেকের। বাধ্য হয়ে অনেকে উঠেছেন ভাড়া বাসায়।
জানতে চাইলে শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম  দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন কে  বলেন, মানুষ অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করার ফলে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ।
তিনি বলেন, আমি এলাকা পরিদর্শন করেছি। তবে তৎক্ষণাৎ কিছু করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাছরীন আক্তার দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন কে   বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। খোঁজ নিয়ে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করব।