
মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত না করায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এর প্রতিবাদে গতকাল ৩০ জুলাই (বুধবার) সকাল ১১টায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয় এক জোরালো মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা।
প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি স্কুলের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। “বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা, সরকারি ও বেসরকারি সকল শিক্ষার্থীর অধিকার”—এই মূল স্লোগানে একত্রিত হয়ে তারা দাবি জানান, সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
মানববন্ধন পূর্বক আয়োজিত প্রতিবাদসভায় সভাপতিত্ব করেন রূপগঞ্জ উপজেলা কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা পরিবারের সমন্বয়ক মনিরুল হক মনির।
সভায় বক্তব্য রাখেন কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা পরিবারের নেতৃবৃন্দ—জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া, এম এ মোমেন, তাইজউদ্দিন শিকদার, আব্দুল কাদির সুমন, মেহেদী হাসান, এম এ হান্নান সবুজ, জান্নাতুল ফেরদৌস, সোহেল রানা, ফকরুল আলম সবুজ, ফিরোজুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, শফিকুর রহমান, মজিবুর রহমান ও এনামুল শিকদার।
বক্তারা বলেন, “একই পাঠ্যবই, একই সিলেবাস, একই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত শিক্ষা ব্যবস্থায় শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানভেদে বৈষম্য সৃষ্টি করে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ রাখা এবং বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।” তারা আরও বলেন, “শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। সরকারি-বেসরকারি ভেদাভেদ করে সেই অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা সংবিধানের পরিপন্থী। এমন বৈষম্য সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে চরম সংকটের জন্ম দেবে।”
এসময় বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, অবিলম্বে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। তা না হলে সারাদেশব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলামের মাধ্যমে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য বছরে একবার বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী বৃত্তি পায় এবং তারা পর্যায়ক্রমে সরকার প্রদত্ত মাসিক ভাতা ও সম্মাননা পায়। কিন্ডারগার্টেন এবং বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারের এই প্রক্রিয়ার বাইরে থাকায় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বারবারই বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিবাদ হলেও এখন পর্যন্ত বিষয়টি সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
Reporter Name 

























