Dhaka 3:28 pm, Monday, 20 October 2025

পাইকগাছা বাজারে বিক্রিত অস্বাস্থ্যকর গরু-ছাগলের মাংস, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ক্রেতারা

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:06:07 am, Saturday, 11 October 2025
  • 95 Time View
এফ,এম,এ রাজ্জাক, পাইকগাছা (খুলনা) 
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার অন্যতম পাইকগাছা বাজার সহ গদাইপুর, গড়ইখালী, কপিলমুনি, আগড়ঘাটা বাজারে প্রতিদিন শত শত কেজি গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। কিন্তু এসব মাংস কতটা স্বাস্থ্যকর ও ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ—তা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে ভেটেরিনারি সার্টিফিকেট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও বাজারে তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
গড়ইখালী হাটে মাংস কিনতে আসা স্থানীয় ক্রেতা আব্দুল কাদের বলেন, কিছুদিন আগে গড়ইখালী হাটে মরা গরুর মাংশ বিক্রি হয়েছে, এর আহে চাঁদখালী ও পাইকগাছা বাজারে ও মরা গরুর মাংশ বিক্রি হয়েছে। যা নিয়ে মামলা হয়েছে। এরপরও মরা বা অসুস্থ্য গরুছাগল জবাই করে বিক্রি হচ্ছে দেদারচ্ছে।
গড়ইখালী হাটে মাংস কিনতে আসা স্থানীয় ক্রেতা আব্দুল কাদের বলেন, “আমরা বাজারে গিয়ে মাংস কিনি, কিন্তু সেটা কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা বুঝতে পারি না। একদিন মাংস কিনে বাসায় নেওয়ার পর দেখি গন্ধ বের হচ্ছে। পরে রান্না করতেই অসুস্থ বোধ হয়।”আরেক ক্রেতা সেলিনা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে ছাগলের মাংস কিনে রান্না করার পর দেখি স্বাদ অস্বাভাবিক। বাচ্চারা খেতে চায়নি। এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকি হতে পারে, তা ভেবে আতঙ্ক লাগে।
পাইকগাছা বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাংস বিক্রেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রতিদিন সতর্কভাবে পশু জবাই করি। অসুস্থ পশু জবাই করার প্রশ্নই আসে না। তবে সরকারি ডাক্তাররা যদি নিয়মিত পরীক্ষা না করেন। সেজন্য আমরা দায়ী হব কেন। নিয়মিত পশু পরিক্ষার ব্যবস্থা থাকলে আমরা খুশী হয় এতে ক্রেতাও খুশি হবে।
অন্যদিকে কিছু বিক্রেতা স্বীকার করেন, সরকারি তদারকি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অসুস্থ পশু জবাই করে থাকতে পারে। এতে সবার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আগড়ঘাটা গ্রামের নুরুজ্জামান জানান, “আমার একটি ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পরে বাজারে জবাই করে দেওয়া হয়। আমি ভেবেছিলাম কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু পরে শুনি কয়েকজন ওই মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন। এরপর থেকে আমি বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “প্রতিদিন প্রতিটি পশু জবাইয়ের আগে পরীক্ষা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে নিয়মিত টিম গঠন করা গেলে মাংসের মান নিশ্চিত করা সহজ হবে।
সচেতন মহলের দাবি, মাংস বিক্রির আগে প্রতিটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা, ভেটেরিনারি সার্টিফিকেট প্রদর্শন ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায় সাধারণ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

ঢাকায় শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সৈয়দপুরে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ

পাইকগাছা বাজারে বিক্রিত অস্বাস্থ্যকর গরু-ছাগলের মাংস, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ক্রেতারা

Update Time : 11:06:07 am, Saturday, 11 October 2025
এফ,এম,এ রাজ্জাক, পাইকগাছা (খুলনা) 
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার অন্যতম পাইকগাছা বাজার সহ গদাইপুর, গড়ইখালী, কপিলমুনি, আগড়ঘাটা বাজারে প্রতিদিন শত শত কেজি গরু ও ছাগলের মাংস বিক্রি হয়। কিন্তু এসব মাংস কতটা স্বাস্থ্যকর ও ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ—তা নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পশু জবাইয়ের আগে ভেটেরিনারি সার্টিফিকেট ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হলেও বাজারে তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
গড়ইখালী হাটে মাংস কিনতে আসা স্থানীয় ক্রেতা আব্দুল কাদের বলেন, কিছুদিন আগে গড়ইখালী হাটে মরা গরুর মাংশ বিক্রি হয়েছে, এর আহে চাঁদখালী ও পাইকগাছা বাজারে ও মরা গরুর মাংশ বিক্রি হয়েছে। যা নিয়ে মামলা হয়েছে। এরপরও মরা বা অসুস্থ্য গরুছাগল জবাই করে বিক্রি হচ্ছে দেদারচ্ছে।
গড়ইখালী হাটে মাংস কিনতে আসা স্থানীয় ক্রেতা আব্দুল কাদের বলেন, “আমরা বাজারে গিয়ে মাংস কিনি, কিন্তু সেটা কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা বুঝতে পারি না। একদিন মাংস কিনে বাসায় নেওয়ার পর দেখি গন্ধ বের হচ্ছে। পরে রান্না করতেই অসুস্থ বোধ হয়।”আরেক ক্রেতা সেলিনা বেগম বলেন, কিছুদিন আগে ছাগলের মাংস কিনে রান্না করার পর দেখি স্বাদ অস্বাভাবিক। বাচ্চারা খেতে চায়নি। এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ঝুঁকি হতে পারে, তা ভেবে আতঙ্ক লাগে।
পাইকগাছা বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাংস বিক্রেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রতিদিন সতর্কভাবে পশু জবাই করি। অসুস্থ পশু জবাই করার প্রশ্নই আসে না। তবে সরকারি ডাক্তাররা যদি নিয়মিত পরীক্ষা না করেন। সেজন্য আমরা দায়ী হব কেন। নিয়মিত পশু পরিক্ষার ব্যবস্থা থাকলে আমরা খুশী হয় এতে ক্রেতাও খুশি হবে।
অন্যদিকে কিছু বিক্রেতা স্বীকার করেন, সরকারি তদারকি না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অসুস্থ পশু জবাই করে থাকতে পারে। এতে সবার সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আগড়ঘাটা গ্রামের নুরুজ্জামান জানান, “আমার একটি ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। পরে বাজারে জবাই করে দেওয়া হয়। আমি ভেবেছিলাম কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু পরে শুনি কয়েকজন ওই মাংস খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন। এরপর থেকে আমি বিষয়টা নিয়ে চিন্তিত।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “প্রতিদিন প্রতিটি পশু জবাইয়ের আগে পরীক্ষা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তবে নিয়মিত টিম গঠন করা গেলে মাংসের মান নিশ্চিত করা সহজ হবে।
সচেতন মহলের দাবি, মাংস বিক্রির আগে প্রতিটি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা, ভেটেরিনারি সার্টিফিকেট প্রদর্শন ও নিয়মিত বাজার মনিটরিং নিশ্চিত করা জরুরি। অন্যথায় সাধারণ মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে।