
মো: শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদেশ—একটি তরুণ প্রজন্মের দেশ, যেখানে স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও পরিশ্রমের গল্প প্রতিদিনই নতুনভাবে লেখা হয়।কিন্তু এই দেশের বুকেই নিঃশব্দে ছড়িয়ে পড়ছে এক ভয়ানক ব্যাধি— মাদক।এ যেন ধীরে ধীরে সমাজের প্রতিটি শিরা-উপশিরায় ছোবল মেরে চলেছে এক অদৃশ্য বিষধর সাপ। একসময় মাদক ছিল সীমিত গোষ্ঠীর বিলাস। এখন এটি ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রাম, কলেজ থেকে ক্লাব, এমনকি গ্রামের চায়ের দোকানেও। ইয়াবা, আইস, গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন— নামগুলো আলাদা, কিন্তু উদ্দেশ্য একটাই— ধ্বংস।
প্রতিবেশী জানে, ওই ছেলেটি মাদকাসক্ত, তবু মুখ খোলে না।এই নীরবতা, এই অবহেলাই মাদককে দিয়েছে সবচেয়ে বড় সুযোগ— গোপনে বেড়ে ওঠার।যেখানে লজ্জা ও ভয় সত্যের চেয়ে বড় হয়, সেখানে মাদক সমাজের অংশ হয়ে ওঠে।যুবসমাজ আজ মাদক ব্যবসায়ীদের প্রধান টার্গেট।তারা জানে, তরুণদের হাতেই রয়েছে দেশের ভবিষ্যৎ— তাই সেই হাতগুলোকে অচল করলেই রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে পড়বে।ইয়াবার চকচকে ট্যাবলেট, বিদেশি বোতলের ঝলকানি— এসবই তরুণদের কাছে আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে আছে ধ্বংস, হতাশা ও মৃত্যুর হাতছানি।একজন মাদকাসক্ত তরুণের মৃত্যু শুধু তার নয়—এটি একটি পরিবারের মৃত্যু, সমাজের মৃত্যু, জাতির সম্ভাবনার মৃত্যু।সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত অভিযান, আইন, ও সচেতনতা কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে।তবুও প্রশ্ন থাকে— কেন মাদক থামছে না?কারণ, মাদককে কেবল আইন দিয়ে বন্ধ করা যায় না;এটি নৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিরোধের মাধ্যমে থামাতে হবে।
কারণ, মাদককে ভয় দেখিয়ে নয়, মানুষ জাগিয়ে রুখতে হবে।বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু এই অগ্রযাত্রা টেকসই হবে না, যদি এর ভেতরে নেশার আগুন জ্বলে।আমাদের তরুণ প্রজন্মই দেশ গড়ার প্রধান শক্তি—তাদের মাদক নয়, দিতে হবে স্বপ্ন, শিক্ষা ও ভালোবাসা।মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধু পুলিশের নয়—এটি আমাদের সবার লড়াই, আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই। আজ মাদককে না বলতে হবে — এখনই, এখানেই।