Dhaka 9:29 pm, Sunday, 9 November 2025

ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে, চরম সংকটে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

  • Reporter Name
  • Update Time : 12:04:34 pm, Sunday, 9 November 2025
  • 65 Time View
মো: ইনতাজ হোসেন, বান্দরবান 
 বান্দরবানের লামা উপজেলায় প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বান্দরবানে ডেঙ্গুর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে লামা উপজেলা। এছাড়াও আলীকদম উপজেলাতেও এই রোগ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে চরম জনবল ও শয্যা-সংকটে ভুগছে। ২২টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫ জন। শয্যা-সংকটের কারণে রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
প্যাথলজি বিভাগ: মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)-এর ২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১ জন।
রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ: ১টি পদ থাকলেও বর্তমানে কেউ কর্মরত নেই।শূন্য পদ: ৬ জন কনসালটেন্ট ও ১২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে।উপসহকারী মেডিকেল অফিসারদের ৪টি পদের মধ্যে ৩ জন কর্মরত।
অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও বেহাল। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে অচল, অন্যটি ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় চলছে। এছাড়া হাসপাতালের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে সাম্প্রতিক বন্যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন সহ ল্যাবের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। জেনারেটর না থাকায় অনেক রোগী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল থাকলেও পর্যাপ্ত ওষুধ ও ডাক্তারের অভাবে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে পাশের চকরিয়া উপজেলায় চিকিৎসার জন্য ছোটেন, যা তাদের জন্য আর্থিকভাবে কষ্টসাধ্য। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে অনেকেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বা মৃত্যুর মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা নাদিম বলেন, বিগত ২ মাসে শুধুমাত্র লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনডোর ও আউটডোরে ২২৯ জন ডেঙ্গু রোগী সেবা নিয়েছে। তবে কোনো রোগী মারা যায়নি।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন এবং ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বর্তমানে হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে, তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, সারা বাংলাদেশে যখন বর্ষার সিজন শুরু হয় তখন ডেঙ্গু আর ম্যালেরিয়া রোগী বৃদ্ধি পায়। সাধারণত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ রোগ ছড়ায়। কিন্তু এখন নভেম্বর মাসে এসেও এর প্রভাব রয়ে গেছে। বাড়ির পাশে, জঙ্গলে, খাল-বিল ও নালায় জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। তাই কোথাও পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।
Tag :
সম্পাদক ও প্রকাশক : আবুল হাসান

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

প্রায় ছয় বছর পরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি শুরু

ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ছে, চরম সংকটে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

Update Time : 12:04:34 pm, Sunday, 9 November 2025
মো: ইনতাজ হোসেন, বান্দরবান 
 বান্দরবানের লামা উপজেলায় প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বান্দরবানে ডেঙ্গুর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে লামা উপজেলা। এছাড়াও আলীকদম উপজেলাতেও এই রোগ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে চরম জনবল ও শয্যা-সংকটে ভুগছে। ২২টি পদের বিপরীতে চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫ জন। শয্যা-সংকটের কারণে রোগীদের মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
প্যাথলজি বিভাগ: মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)-এর ২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১ জন।
রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ: ১টি পদ থাকলেও বর্তমানে কেউ কর্মরত নেই।শূন্য পদ: ৬ জন কনসালটেন্ট ও ১২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে।উপসহকারী মেডিকেল অফিসারদের ৪টি পদের মধ্যে ৩ জন কর্মরত।
অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও বেহাল। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে অচল, অন্যটি ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় চলছে। এছাড়া হাসপাতালের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে সাম্প্রতিক বন্যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন সহ ল্যাবের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। জেনারেটর না থাকায় অনেক রোগী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল থাকলেও পর্যাপ্ত ওষুধ ও ডাক্তারের অভাবে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে পাশের চকরিয়া উপজেলায় চিকিৎসার জন্য ছোটেন, যা তাদের জন্য আর্থিকভাবে কষ্টসাধ্য। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে অনেকেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বা মৃত্যুর মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা নাদিম বলেন, বিগত ২ মাসে শুধুমাত্র লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনডোর ও আউটডোরে ২২৯ জন ডেঙ্গু রোগী সেবা নিয়েছে। তবে কোনো রোগী মারা যায়নি।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন এবং ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বর্তমানে হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে, তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, সারা বাংলাদেশে যখন বর্ষার সিজন শুরু হয় তখন ডেঙ্গু আর ম্যালেরিয়া রোগী বৃদ্ধি পায়। সাধারণত মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ রোগ ছড়ায়। কিন্তু এখন নভেম্বর মাসে এসেও এর প্রভাব রয়ে গেছে। বাড়ির পাশে, জঙ্গলে, খাল-বিল ও নালায় জমে থাকা পানি থেকে এডিস মশার জন্ম হয়। তাই কোথাও পানি জমে থাকতে দেওয়া যাবে না।