
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান, আয়াওয়ামী লীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ)সাংগঠনিক সম্পাদক ও পাটকেলঘাটা আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিনের এই প্রভাবশালী ব্যক্তির ক্ষমতার দাপটে নানা দুর্নীতির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা এখনো ন্যায়ের মুখ দেখেনি।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেখ আব্দুল হাই “লাল সবুজ সমিতি” নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
বিদ্যালয়ের অন্তত ১৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে আদায় করেন ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল কাদের-এর কাছ থেকে আত্মসাৎ করেন ৬ লাখ টাকা।এছাড়া, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক রেহেনা খানমের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া রেজুলেশনের মাধ্যমে আনারুল ইসলাম ও মুকুন্দ মণ্ডল নামে দুই ব্যক্তিকে শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন এবং এর বিনিময়ে নেন ১৫ লাখ টাকা ঘুষ। বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সমিতি থেকেও আত্মসাৎ করেন ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া ক্যাশের ২ লাখ ২৪ হাজার টাকা-ও নিজের পকেটে পুরেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, এখনো পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা অনাদায়ী রয়েছে।
শেখ আব্দুল হাই কেবল এই বিদ্যালয়েই নয়, বড়বিলা মাদ্রাসা ও কাশিপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সভাপতি থাকার সুবাদে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন প্রায় ৫০ লাখ টাকা।এছাড়া, স্থানীয় শাঁকদহা এলাকায় সরকারি জমি দেওয়ার নামে অসহায় মানুষের কাছ থেকেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এইসব অন্যায়-অনিয়মের প্রতিবাদে তৎকালীন সময়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী “ঝাঁটা মিছিল” পর্যন্ত করেন শেখ আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে।
কিন্তু তবুও ক্ষমতার দাপটে তিনি রয়ে যান অক্ষত, আর ভুক্তভোগীরা পাননি কোনো প্রতিকার।স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার কারণে আজও এসব দুর্নীতির বিচার হয়নি। এতকিছুর পরও ৫ তারিখের পর গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়ানো আব্দুল হাই এক অদৃশ্য ইশারায় খুব শীঘ্রই আবারও নাকি তার চেয়ারম্যান এবং প্রধান শিক্ষকের চেয়ার দখল করতে যাচ্ছেন বলে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সাইফুল্লাহ ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ মাসুদুর রহমান এ প্রতিবেদককে এমনটি জানিয়েছেন। তবে স্থানীয় সচেতন মহল ও জনগণের একটাই দাবি, দীর্ঘদিনের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত এবং আবদুল হাইয়ের বিচার নিশ্চিত করা হোক, যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সমাজে আবারও ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
Reporter Name 




















