আব্দুস সালাম জেলা প্রতিনিধি:- নীলফামারীতে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হল বাঙালী জাতির গুরুত্বপূর্ণ খাদ্যদ্রব্য পিঠা উৎসব মেলা। এ খাদ্যটি বাঙালী জাতির অন্যতম উৎসব আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে। পিঠার নামে যেমন বৈচিত্র রয়েছে তেমনি রয়েছে স্বাদেও পরিপুর্ন তৃপ্তি। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) শেষ হল পিঠা উৎসব মেলা। পাঁচদিন ব্যাপি আনন্দ ঘন পরিবেশে মেলাটি উৎযাপিত হয়েছিল। মেলার শেষ দিনে উপস্থিত ছিলেন, সম্মানিত জেলা প্রশাষক জনাব পঙ্কজ ঘোষ, জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আরিফুজ্জামান সহ অনেকে।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
গত বুধবার (৩১শে জানুয়ারী) বিকাল ৩ টায় সদরের শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে পিঠা উৎসব শুরু হয়। উক্ত অনুষ্ঠানটি নীলফামারী সদর শিল্পকলা একাডেমিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন শুভ উদ্বোধন করেছিলেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘মাছে ভাতে বাঙালী, ঐতিহ্যবাহী পিঠা-পুলি, রন্ধন আর পিঠার বাহারে শিল্পী আছে ঘরে ঘরে”-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সারা দেশের ন্যায় নীলফামারীতে তিনদিনের পরিবর্তে পাঁচদিন ব্যাপী জাতীয় পিঠা উৎসব-২০২৪ পালিত হয়েছে। পিঠা উৎসব অনুষ্ঠানে ১২টি স্টল এর ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও পিঠা উৎসব উপলক্ষে দেশীয় শিল্পীদের নিয়ে প্রতিদিন ছিল লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয়ভাবে ফিতা কেটে পিঠা উৎসবের উদ্বোধণ করেছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (উপসচিব) সাইফুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফারুক আল মাসুদ,নীলফামারী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আরিফুজ্জামান সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাঙালী জাতির মহাউৎসব এ মেলায় বাহারী রংগের পিঠার লক্ষ্য করা যায় যার নাম শুনলেই জিভে জল আসে। বিশেষ করে শীতের পিঠা বাঙালীর জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। পিঠা উৎসবে মানুষের উপচে পরা ভির ও পিঠা খাওয়ার ধুম এবং মানুষের প্রচুর আগ্রহ লক্ষ্য করা যায় ।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, একসময় পাড়ায়, মহল্লায়, ছোট-বড় সবাই ঐতিহ্যবাহী বাহারি পিঠা খাওয়ার আনন্দে মেতে উঠতেন। বর্তমানে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে যাচ্ছে। অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে নগরের এ ব্যস্ত জীবনে বাড়ির উঠানে পিঠা তৈরির আমেজ। তাই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি অঞ্চলভিত্তিক বিশেষায়িত ও লুপ্তপ্রায় পিঠা শিল্পকে তুলে আনার লক্ষ্যে সারা দেশে জাতীয় পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে।
বাঙালী জাতির পূর্ব ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় পিঠা উৎসব পরিষদ যৌথভাবে আয়োজন করেছে।
উদ্বোধনের দিন বিকাল ৩টা থেকেই শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে লোকের লোকারন্যে ভরপুর হয়ে উঠেছিল। স্টলে স্টলে লোকের ভিড় দেখার মতো ছিল। বড়দের পাশাপাশি ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা দিয়েছে তাদের স্টল। ছিল বিভিন্ন বাহারী রকমের বিভিন্ন আকারের পিঠা।
উল্লেখ্য,পাঁচদিন ব্যাপী পিঠা মেলা শেষে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে সনদ প্রদান করা হয়। সনদ পত্র পদান করেন সম্মানিত জেলা প্রশাষক জনাব পঙ্কজ ঘোষ ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আরিফুজ্জামান। পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।