পটুয়াখালী জেলার গলাচিপাতে অবশেষে বিয়ে করলেন সৌরভ-আয়েশা
মোঃ কবির হাওলাদার
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপায় দীর্ঘ ১ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে বিয়ে করলেন মো. সৌরভ (২৩) ও মোসা. আয়শা (২১) নামের প্রেমিক যুগল। মঙ্গলবার (২০ জুন) পটুয়াখালী বিজ্ঞ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে দুজনের সম্মত্তিতে এ বিয়ে এ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে এ বিবাহ সম্পন্ন হয়। বর সৌরভ হচ্ছেন উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বাদুরা নতুনচর গ্রামের মো. শাহআলম হাওলাদারের ছেলে। আর কনে আয়শা হচ্ছেন গলাচিপা উপজেলার একই গ্রামের আল আমিনের মেয়ে। জানা যায় দীর্ঘ ১ বছর থেকে তাদের মোবাইলের মাধ্যমে পরিচয় ও ভাল লাগার সৃষ্টি হয়। ভাল লাগা থেকে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন পর্যন্ত তাদের এই ভালবাসাকে পূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাক সাধে উভয়ের পরিবার। তাই পরিবারের আপত্তি সত্বেও বাবা-মা’কে না জানিয়েই বিয়ে করলেন মো. সৌরভ ও মোসা. আয়শা। এ বিষয়ে সৌরভ বলেন, আমরা একে অপরকে অনেক আগে থেকেই চিনি। একই এলাকা ও মোবাইলে পরিচয়ের সূত্র ধরে আমাদের মাঝে একটা ভাল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমরা আমাদের সম্পর্কের কথা পরিবারের সবার সাথে শেয়ার করি। কিন্তু তারা আমাদের এই বিষয়টি মেনে নিতে চায় নিই। তাই আমরা বাধ্য হয়েই কোর্ট ম্যারেজ করেছি। এ ছাড়া ওকে পাওয়ার জন্য আমার অন্য কোন উপায় ছিল না। ওকে হারালে আমরা কেউই বাঁচতাম না। আমাদেরও যে একটা পছন্দ অপছন্দের বিষয় আছে তা আমাদের পরিবার বুঝতে চায় না। এ বিষয়ে আয়শা বলেন, আমার বিবাহের পরিপূর্ণ বয়স হয়েছে। আমি সৌরভকে অনেক আগে থেকেই চিনি। সে একজন ভাল মানুষ। আর তাই আমি তাকে ভালবেসেছি। আমাদের ভালবাসা বাবা-মা মেনে নিতে চায় নি। তাই আমরা দুজনেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই। নিজের ভালো মন্দ বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। তাই আমি বাধ্য হয়ে সৌরভকে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা বিবাহ করি। সৌরভের মত একজন ভাল মনের মানুষকে আমি হারাতে পারব না। এ বিষয়ে আয়শার বাবা আল আমিন জানান, আমি শুনেছি আমার মেয়ের সাথে সৌরভের বিবাহ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি হতাশ। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আমার মেয়ে যদি সৌরভকে বিয়ে করে সুখী হয় সেটা তার ব্যাপার। এ বিষয়ে সৌরভের বাবা মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, আমার ছেলে আমাদেরকে না জানিয়েই বিবাহ করেছে। আয়শা নামের একটা মেয়ে ওর পছন্দ বলে জানিয়েছিল। সৌরভ নিজের একটা কর্মস্থল ঠিক হওয়ার পর আমি ওকে পরে বিবাহ করাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে বিবাহ করবে তা বুঝতে পারি নি। ওরা যদি এতে সুখী হয় তাতেই আমাদের সুখ। এ বিষয়ে মহিলা সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য রেখা বেগম, ঝুমুর বেগম, সাবেক ইউপি সদস্য হিরু রাজ্জাক মেম্বর এরা বলেন, ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। শুনেছি তারা কোর্ট ম্যারেজ করেছে এবং ৩ লাখ টাকার কাবিনও করেছে। কিন্তু ওদের পরিবারের কেউই বিষয়টি মেনে নেয় নি। উপর্যুক্ত বয়স হলে ছেলে মেয়েদের পছন্দেই বিবাহ দেয়া উচিৎ। এ বিষয়ে গোলখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের পরিবার নিয়ে বসা হলেও কোন সুরহা দিতে পারি নাই।